২০২২ সালে নিউ ইয়র্কের একটি ইভেন্টে ব্রিটিশ-ভারতীয় লেখক সলমন রুশদির হামলা চালায় এক ব্যক্তি। এদিন কোর্টে সেই ঘটনার সাক্ষী দিতে গেছিলেন তিনি। হাদী মাটার তাঁর উপর যে আক্রমণ চালিয়েছিল সেই বিষয়ে কী বললেন লেখক?
কী ঘটেছে?
মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি হাদী মাটারের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন সলমন রুশদি। এই ব্যক্তিই ২০২২ সালে নিউ ইয়র্কে একটি সাহিত্য সভায় লেখকের উপর আক্রমণ চালিয়েছিলেন। তারপর সেখানে উপস্থিত বাকিরা হাদী মাটারকে ধরে ফেলেন এবং পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এদিন সেই ঘটনার সাক্ষ্য দিতে এসে তাঁর সঙ্গে গোটা ঘটনা ব্যাখ্যা করেন এই জনপ্রিয় ব্রিটিশ ভারতীয় লেখক।
রুশদি এদিন জানান তিনি প্রথমে খেয়ালই করেননি যে এক ব্যক্তি তাঁর দিকে ছুটে আসছেন ডান দিক থেকে। লেখকের কথায়, ‘আমি ওঁকে একেবারেই শেষ মুহূর্তে লক্ষ্য করি। খালি দেখেছিলাম একজন কেউ কালো পোশাক পরে, মুখে কালো মাস্ক লাগিয়ে আসছে। ওঁর চোখ দুটো আমি দেখেছিলাম, কী ভীষণ হিংস্র ছিল। সেটা দেখেই আমি ভয় পেয়ে যাই।’
সলমন রুশদি জানান অতর্কিতে অথচ নৃশংস ভাবে তাঁর উপর আক্রমণ চালানো হয়। তাঁর কথায়, ‘সজোরে আমায় আঘাত করেছিল। আমি ভেবেছিলাম উনি বোধহয় ঘুষি মারছেন। কিন্তু পরে দেখলাম আমার জামা কাপড় রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আমার উপর লাগাতার আক্রমণ চালিয়েই যাচ্ছিল।’ তিনি এদিন আরও বলেন যে তিনি উঠে পালানোর চেষ্টা করেন কিন্তু তাঁর কোমর, কাঁধ, বুক ধরে বাঁধা দেওয়া হয়। যদিও তিনি চেয়ার ধরে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পারেননি। শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় স্টেজেই লুটিয়ে পড়েন।
সলমন রুশদি এদিন তাঁর সঙ্গে ঘটা ঘটনার ভয়াবহতা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমার বুক, পেটে একাধিকবার আঘাত করা হয়েছিল। আমার বুকের ঠিক মাঝে তিনটি ছুরির আঘাত আছে। চোখেও আঘাত করেছিল। এখন আর ওই চোখে দেখতে পাই না।’
পরিশেষে লেখক জানান তিনি ভেবেছিলেন তিনি বুঝি মরেই যাচ্ছিলেন। এই ঘটনার পর ১৭ দিন হাসপাতালে ছিলেন। কিন্তু এখন প্রায় আড়াই বছর কেটে গেলেও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি বলেই জানান সলমন রুশদি। তাঁর কথায়, ‘আমার মনে হয় আমি এখনও ১০০ শতাংশ সুস্থ হয়নি। আর তেমন এনার্জি পাই না। আগের মতো গায়ে শক্তি পাই না।’