যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে(Jadavpur University) ব়্যাগিংয়ের(Ragging) জেরে প্রথম বর্ষের ছাত্র খুনের ঘটনায় উঠে এসেছিল হস্টেলে প্রাক্তনীদের দৌরাত্ম্যের তথ্য। এবার প্রায় একই ধরণের তথ্য উঠে আসছে বউবাজারে মোবাইল ফোন চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায়। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, ওই হস্টেলের কর্মী সেজে বছরের পর বছর ঘর দখল করে ছিলেন ২ প্রাক্তনী। তাদের নির্দেশেই এরশাদ নামে ওই যুবককে গত শুক্রবার সকালে পিটিয়ে মারা হয়েছে।
বউবাজারের(Burrabazar) উদয়ন হস্টেল স্নাতকোত্তর পাঠরত তফশিলি জাতি ও উপজাতির ছাত্রদের জন্য। নাম মাত্র খরচে সেখানে থাকতে পারেন ছাত্ররা। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছেন, শুক্রবার এরশাদ খুনের ঘটনার মূল হোতা সেখানকার আবাসিক ২ প্রাক্তন ছাত্র। প্রেসিডেন্সি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ২ ছাত্রের নেতৃত্বেই ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে ওই যুবককে বেধড়ক পেটানো হয়।
জানা গিয়েছে, এরশাদকে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে বেশি মারধর করার বিরোধিতা করেছিলেন ছাত্রদের একাংশ। কিন্তু তা কানে তোলেনি ওই ২ প্রাক্তনী। শুধু তাই নয়, স্থানীয়রা যুবককে বাঁচাতে হস্টেলে ঢোকার চেষ্টা করলেও বাধা দেয় তারা। এই ঘটনায় হস্টেলের সুপার শক্তিপদ বিশ্বাসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। হস্টেলের স্নাতকোত্তর আবাসিকদের কেন দারোয়ান বা রাঁধুনির জোগাড়ের মতো পদে বহাল করা হল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তারা কি সত্যিই সেই কাজ করত, না কি হস্টেলের ঘর দখলে রাখতে তাদের দারোয়ান ও জোগাড়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই হস্টেলের জন্য আসেপাশের বাড়িটে টেকা মুশকিল হয়ে গেছিল। গভীর রাত পর্যন্ত চিৎকার করত হস্টেলের আবাসিকরা। রাস্তায় স্থানীয়দের লক্ষ্য করে মদের বোতল ছুড়ত তারা।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, উদয়ন হস্টেলে দারোয়ান ও নাইট গার্ড পরিচয় দিয়ে ওই হস্টেলেই ঘর দখল করে রেখেছিলেন ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর এক যুবক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর এক যুবক ২০১৮ সাল থেকে ওই হস্টেলে রাঁধুনির হেল্পার পরিচয়ে ঘর দখল করে রয়েছে। ধৃত ১৪ জনের মধ্যে রয়েছে এদের নামও। কিন্তু পাঠ্যক্রম শেষ হলেও কী ভাবে তারা দারোয়ান বা রাঁধুনির জোগাড়ে পরিচয়ে ঘর দখল করে থাকল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।