৩ দেহ উদ্ধারে আটক মামা, মামি, মাসি

Spread the love

ছোট্ট ছেলেটার জন্মের পর থেকেই ছিল কঠিন অসুখ। সেজন্য টাকা পয়সা ধার বাকি করে ২টো অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন। বাকি ছিল আরও একটা অস্ত্রোপচার। তারই মধ্যে চলছিল সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। এসবেই জেরবার হয়ে কি চরম পথ বেছে নিলেন হালতুর রায় দম্পতি? মঙ্গলবার বাড়ি থেকে ৩ জনের দেহ উদ্ধারের পর সেই প্রশ্নই উঠছে। এই ঘটনায় নিহত সোমনাথ রায়ের মামা – মামি ও মাসিকে আটক করেছে কসবা থানার পুলিশ।

মঙ্গলবার হালতু পূর্বপল্লিতে নিজের বাড়ি থেকে সোমনাথ রায়, তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায় ও আড়াই বছরের ছেলে রুদ্রনীলের দেহ উদ্ধার হয়। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন দম্পতি। আত্মহত্যার আগে ছেলেকে হত্যা করেন তাঁরা। এর পর ছেলেকে ওড়না দিয়ে বুকে বেঁধে গলায় ফাঁস দেন সোমনাথ। কিন্তু কেন এই চরম সিদ্ধান্ত।

আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সোমনাথবাবু রামলাল বাজার – গড়িয়া রুটে অটো চালাতেন। ২টি অটো ছিল তাঁর। একটি নিজে চালাতেন, আরেকটি ভাড়া দিতেন। ছেলের অস্ত্রোপচারের জন্য ১টি অটো বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন সোমনাথ। এছাড়া বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন তিনি। সেই টাকা দিয়ে ছেলের ২টি অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন। আরও ১টি অস্ত্রোপচার করানোর দরকার ছিল। সেজন্য টাকা জোগাড় করা শুরু করেছিলেন তিনি।

নিহত সুমিত্রাদেবীর বাবা দাবি করেছেন, সোমনাথদের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ ছিল তাঁর মামার। যে বাড়িতে সোমনাথ থাকতেন সেটি ভাগ করার পরিকল্পনা চলছিল। সেজন্য তাদের নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন করতেন মামা ও মামি। সুমিত্রাদেবীর বাবাকে একথাও বলতে শোনা গিয়েছে যে, ওরা যে কী কী করত না বললে বিশ্বাস করবেন না।

সোমনাথের অটো যে ব্যক্তি ভাড়ায় চালাতেন তিনি বলেন, সোমবার সোমনাথ জানান, মঙ্গলবার বেড়াতে যাবেন তিনি। তখন অটোর চাবি সোমনাথের কাছে চান ওই ব্যক্তি। কিন্তু চাবি দেননি সোমনাথ। বলেন চাবি অটোতেই থাকবে। মঙ্গলবার তিনি দেখেন, চাবি রয়েছে অটোতেই। সঙ্গে রাখা আছে ২ হাজার টাকা।

ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া দেওয়ালে লেখা রয়েছে বেশ কিছু কথা। তাতে এই পরিণতির জন্য মামা – মামিকেই দায়ী করেছেন সোমনাথ। যদিও মামা – মামির দাবি, সোমনাথের মায়ের পেনশনের পুরো টাকা সে-ই ব্যবহার করে। ফলে তাঁদের দোষারোপ করা অনর্থক। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *