স্কুলে পড়ুয়াদের সম্পূর্ণ মোবাইল নিষেধাজ্ঞা কাম্য নয়!

Spread the love

স্কুলে পড়ুয়াদের মোবাইল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা কাম্য নয়। এক মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাইকোর্টের। আদালতের মতে, এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। তাই স্কুলে পড়ুয়াদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পরিবর্তে সেটির উপর নজরদারি এবং কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকা বলে মনে করছে আদালত। স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কী করণীয়, সে বিষয়ে আট দফা গাইডলাইনও বেঁধে দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।

বিচারপতি অনুপ জয়রাম ভম্ভানির মতে, বর্তমানে প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মোবাইল ব্যবহার করে পড়ুয়ারা অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। পাশাপাশি এটি পড়ুয়াদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার ক্ষেত্রেও সাহায্য করে।বিচারপতি জানান, স্কুলে পড়ুয়াদের মোবাইল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত নয়। তবে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে কী করণীয়, তা নিয়ে আট দফা নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

প্রথম, যে যে স্কুলে সম্ভব, সেখানে পড়ুয়াদের স্কুলের সময়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মোবাইল জমা রাখতে হবে।দ্বিতীয়, শ্রেণিকক্ষে, স্কুলের গাড়িতে এবং স্কুলের মধ্যে অন্য কোনও সাধারণের ব্যবহারযোগ্য স্থানে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।তৃতীয়, অনলাইনে কেমন আচরণ হওয়া উচিত, কী ভাবে নৈতিকতার সঙ্গে মোবাইল ব্যবহার করতে হবে, তা পড়ুয়াদের শেখাবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।চতুর্থ, বেশি ক্ষণ মোবাইলের স্ক্রিনে নজর থাকলে বা সমাজমাধ্যম ব্যবহার করলে দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগ বৃদ্ধি পেতে পারে। এ বিষয়ে পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে স্কুলকে।পঞ্চম, স্কুলের নীতি নির্ধারণের সময়ে যোগাযোগ এবং সুরক্ষার জন্য মোবাইল ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। তবে বিনোদনের জন্য নয়।ষষ্ঠ, স্কুলে পড়ুয়াদের মোবাইল ব্যবহার সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অভিভাবক, শিক্ষাবিদ এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।সপ্তম, স্কুলগুলি নিজেদের পরিস্থিতি অনুসারে নীতি নির্ধারণ করতে পারবে।অষ্টম, পড়ুয়াদের স্কুলে মোবাইল ব্যবহার সংক্রান্ত নিয়ম না-মানা হলে কী পদক্ষেপ করা হবে, সে বিষয়ে স্বচ্ছতা রাখতে হবে কর্তৃপক্ষকে। তা যাতে খুব রূঢ় না হয়, সে দিকেও নজর রাখতে হবে।

দিল্লির এক স্কুলে নাবালক পড়ুয়ার মোবাইল ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে এই মামলাটির সূত্রপাত। স্কুলে মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ওই পড়ুয়া। শুনানিতে এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা স্থির করে দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে অনুরোধ করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *