চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের মতো বড় মঞ্চে অস্ট্রেলিয়ার ঝুলিয়ে দেওয়া ২৬৫ রানের টার্গেট বিরাট না হলেও ছোটখাটো নয় মোটেও। তাই সতর্ক না হলে মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা ছিলই। বিরাট কোহলি(Virat Kohli) অবশ্য লক্ষ্য থেকে একচুলও নড়েননি। তিনি ধীরে সুস্থে পার্টনারশিপ গড়ার কাজে মন দেন। শ্রেয়স আইয়ার, অক্ষর প্যাটেল, লোকেশ রাহুলদের সঙ্গে জুটিতে দলকে জয়ের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন বিরাট।
ম্যাচের শেষে কোহলি নিজেই জানান যে, খেলা যত সম্ভব গভীরে টেনে নিয়ে যাওয়াই তাঁর লক্ষ্য ছিল। শেষে যখন দেখেন ২০-৩০ রান বাকি রয়েছে, তাড়াতাড়ি ম্যাচ ফিনিশের কথা মনে হয় এবং সেই চেষ্টায় আউট হয়ে বসেন। বিরাট যখন সাজঘরে ফেরেন, তখনও জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল ৩৫ রান।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যাট হাতে ক্রিজে আসেন হার্দিক পান্ডিয়া। তিনি সম্ভবত কোহলির অপূর্ণ ইচ্ছা সম্পূর্ণ করতে উঠেপড়ে লাগেন মাঠে নেমেই। কয়েকটি বল দেখে নিয়ে হার্দিক যেভাবে বড় শট নেওয়া শুরু করেন, তা দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ম্যাচ ফিনিশ করতে চাইছিলেন। যদিও দলকে এক্কেবারে জয়ের চৌকাঠে পৌঁছে দিয়ে আউট হয়ে বসেন পান্ডিয়াও। তবে সংক্ষিপ্ত ইনিংসে তিনি যে রকম আতশীয় শট খেলেন, তা ক্রিকেটপ্রেমীদের যারপরনাই আনন্দ দেয় নিশ্চিত।
হার্দিক ২৪ বলে ২৮ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলার পথে ১টি চার ও ৩টি বিশাল ছক্কা মারেন। তনভীরকে মারা তাঁর প্রথম ছক্কাটি ছিল দৈত্যাকার। ইনিংসের ৪৪.৫ ওভারে তনভীরের ফ্লাইটেড ডেলিভারি ব্যাটের নাগালে পেতেই সোজা বোলারের মাথার উপর দিয়ে তুলে মারেন পান্ডিয়া। শটের পিছনে কতটা শক্তি খরচ করেন হার্দিক, সেটা বোঝা যায় ছক্কার দূরত্ব দেখেই। হার্দিক সেই ছক্কায় বল পাঠিয়ে দেন ১০৬ মিটার দূরে। হার্দিকের বিশাল ছক্কা দেখে সাজঘরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়তে দেখা যায় কোহলিকে। ভিআইপি জোনে বল চলে যাওয়ার পরে সেই বল কুড়িয়ে মাঠে ছুঁড়ে দেন স্বয়ং আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ।
পরে ৪৬.৫ ও ৪৬.৬ ওভারে অ্যাডাম জাম্পার পরপর ২টি বলে ছক্কা মারেন পান্ডিয়া। ৪৭.৩ ওভারে ন্যাথন এলিসের বলে লফটেড শটে একটি চার মারেন তিনি। ৪৭.৫ ওভারে এলিসের বলে ম্যাক্সওয়েলের হাতে ধরা দিয়ে হার্দিক যখন মাঠ ছাড়েন, জিততে ভারতের দরকার তখন মাত্র ৬ রান।
এক্ষেত্রে হার্দিকের অপূর্ণ কাজ সমাপ্ত করেন লোকেশ রাহুল। তিনি ৪৮.১ ওভারে ম্যাক্সওয়েলের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ১১ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলে টিম ইন্ডিয়া।