দুবাই থেকে সোনা পাচারের অভিযোগে বুধবার কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাওকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তাঁর কাছ থেকে প্রায় ১৫ কেজি ওজনের ১২.৫৬ কোটি টাকার সোনার বার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেই মামলার তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই উঠে আসছে নতুন ও চমকপ্রদ তথ্য। সূত্রের খবর, প্রতি কেজি চোরাচালান সোনার জন্য রাওকে ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হত। দন্তে আরও জানা গেছে যে চোরাচালান অভিযানের জন্য জ্যাকেট এবং কোমরের বেল্ট ব্যবহার করতেন রানিয়া।
জানা গিয়েছে, গত ১ বছরে রানিয়া ৩০ বার দুবাই গিয়েছেন। তাঁর এত ঘনঘন দুবাই ভ্রমণের জেরে ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স বা ডিআরআই-এর সন্দেহ হয়। এই মামলায় এখনও পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মোট ১৭.২৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৪.৭৩ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। এদিকে রানিয়া হলেন আইপিএস অফিসার রামচন্দ্র রাওয়ের মেয়ে। মেয়ের গ্রেফতারিতে শোকপ্রকাশ করেছেন রামচন্দ্র রাও।
‘মাণিক্য’ (২০১৪) সিনেমাতে কন্নড় সুপারস্টার সুদীপের বিপরীতে অভিনয় করার জন্য পরিচিত রানিয়া রাও। এছাড়া আরও কয়েকটি দক্ষিণী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। যার মধ্যে ১০১৬ সালে তামিল সিনেমা ‘ওয়াঘা’ এবং ২০১৭ সালের কন্নড় সিনেমা ‘পটাকি’ আছে। এদিকে রানিয়া রাও হলেন আইপিএস অফিসার কে রামচন্দ্র রাওয়ের সৎ মেয়ে। রামচন্দ্র বর্তমানে কর্ণাটক স্টেট পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের ডিরেক্টর জেনারেল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, দুবাই থেকে ফিরতি পথে বিমানবন্দরে বিনা চেকিংয়েই বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করছিলেন রানিয়া রাও। সেই সময় ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট পুলিশ স্টেশনের এক কনস্টেবল তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তবে ডিআরআই গোয়েন্দাদের কাছে রানিয়াকে নিয়ে আগের থেকেই খবর ছিল। এই আবহে তাঁকে ধরে ফেলেন গোয়েন্দারা। রানিয়া নাকি এই সোনা তাঁর পোশাকের পাশাপাশি শরীরেও লুকিয়ে রেখেছিলেন। পরে রানিয়ার বেঙ্গালুরুর বাড়িতেও ডিআরআই তদন্তকারীরা তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, রানিয়া রাও নাকি তাঁর স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই দুবাইতে যেতেন। যদিও দুবাইতে রানিয়ার কোনও পরিবারের সদস্য থাকেন না। রানিয়ার কোনও ব্যবসাও সেখানে নেই। এই আবহে গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয়েছিল। এর আগেও নাকি দুবাই থেকে ফিরে পুলিশ এসকর্ট নিয়ে বিনা বাধায় বিমাবন্দর থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন রানিয়া। এই আবহে রানিয়া একাই এই সোনা পাচারের সঙ্গে যুক্ত নাকি এর নেপথ্যে আরও কেউ আছে, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। যদিও গোয়েন্দারা রানিয়াকে আদালতে পেশ করে তাঁকে হেফাজতে চাননি। এদিকে গ্রেফতারির পরে রানিয়া দাবি করেন, তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করে সোনা পাচার করতে বাধ্য করা হয়েছে। এই নিয়ে তদন্ত করবেন গোয়েন্দারা। এদিকে এই সোনা কেনার অর্থের উৎস কী, তা নিয়েও তদন্ত শুরু হবে। এই আবহে ইডি তদন্তে নামতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।