Yunus on Awami League। আওয়ামী লিগ ভোটে লড়বে কিনা, সেটা তারাই বলতে পারবে

Spread the love

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে কি অংশগ্রহণ করতে পারবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লিগ? এই প্রশ্নের উত্তর একমাত্র আওয়ামী লিগই দিতে পারবে। তারাই স্থির করবে, আসন্ন নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে কিনা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।

এই প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে ইউনুস বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লিগ) (নির্বাচনে অংশগ্রহণ) করতে চায় কিনা, সেই সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে। আমি সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’ এরইসঙ্গে, তিনি আরও একটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দেন। তা হল – ‘এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। কারণ, নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত নেয় কে নির্বাচনে অংশ নেবে।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ অগস্ট বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর নানা মহলের তরফে একাধিকবার আওয়ামী লিগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত অন্তত সেদেশের কেয়াকটেকার প্রশাসন তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি।

অন্যদিকে, এই প্রেক্ষাপটে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসিরউদ্দিনকে হাসিনার দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি জানিয়েছিলেন, যদি বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বা আদালত আওয়ামী লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে, তাহলে তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতেই পারে। কারণ, তাতে আইনত কোনও বাধা থাকবে না।

কিন্তু, প্রশ্ন হল – বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে? বিবিসি-র প্রতিনিধিও ইউনুসকে এই প্রশ্ন করেছিলেন। জবাবে সেই একই কথা বলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, প্রয়োজনীয় সংস্কার হয়ে গেলে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে ভোট হবে। অন্যথায় – অর্থাৎ – প্রয়োজনীয় সংস্কার যদি বাকি থেকে যায়, তাহলে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে আগামী বছর – অর্থাৎ – ২০২৬ সালে মার্চ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে।

বিবিসি-র সাংবাদিক ইউনুসের কাছে আরও জানতে চান, বাংলাদেশে পালাবদলের পর সাতমাস কেটে গিয়েছে। অথচ, এখনও স্থিতাবস্থা বা শান্তি প্রতিষ্ঠিত হল না। কেন এমনটা হচ্ছে? এর দায় অবশ্য ইউনুস নিজের ঘাড়ে নিতে চাননি। বদলে এই পরিস্থিতির জন্য হাসিনার শেষ দেড় দশকের (প্রায়) শাসনকালকে দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘ভালো থাকা একটি আপেক্ষিক বিষয়। যদি আপনি গত বছরের এই সময়ের সঙ্গে তুলনা করেন, তবে সব ঠিক আছে বলেই মনে হয়!’

ইউনুস আরও দাবি করেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর যখন তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছিল, তখন নাকি তিনি ‘বিস্মিত’ হয়েছিলেন! এই প্রসঙ্গে ইউনুস বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল না যে, আমি সরকারের নেতৃত্ব দেব। আমি আগে কখনও সরকার চালাইনি। অথচ আমাকেই প্রয়োজনীয় কাজগুলি করতে হবে।’

এই সাক্ষাৎকারেই হাসিনার আমলকে বিপর্যয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন মহম্মদ ইউনুস। দাবি করেছেন, তাঁর অন্তর্বর্তী সরকার সেই দীর্ঘ বিপর্যয় থেকে বর্তমানে বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টা করছে।

ইউনুসের কথায়, ‘ব্যাপারটি যখন ঠিক হয়ে গেল, তখন আমরা কাজগুলো সংগঠিত করতে শুরু করি। আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, দেশের জন্য অর্থনীতি ঠিক করা আমাদের অগ্রাধিকার ছিল।…. এটা এমন, যেন ১৬ বছরের এক ঘূর্ণিঝড়ে সব উড়ে গিয়েছিল। আমরা এখন ভাঙা টুকরোগুলো জড়ো করছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *