ওবিসি শংসাপত্র বাতিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের(Kolkata Highcourt) নির্দেশ কার্যকর করার কোনও ইচ্ছে রাজ্য সরকারের আছে বলে মনে হয় না। রাজ্যে বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা গ্রহণ করল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০২৪ সালের ২২ মে দেওয়া নির্দেশ কার্যকরের ক্ষেত্রে গাফিলতি দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ওয়েলফেয়ার কমিশন অ্যাক্ট, ১৯৯৩ অনুযায়ী ওবিসিদের নতুন তালিকা তৈরি করতে হবে। ওই তালিকা বিধানসভায় পেশ করে চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে। যদিও সেই নির্দেশ এখনও পর্যন্ত মানা হয়নি।
এদিকে এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। সেখানে ওই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি। এখনও শুনানি চলছে। তারপরও কেন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকরে অনীহা? গোটা বিষয়ে ক্ষুব্ধ ডিভিশন বেঞ্চ। আর তাই আগামী ১২ মার্চ দুপুর ২টোয় এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি মামলাটি বিচারাধীন থাকলেও গত ৬ জানুয়ারি দায়ের হওয়া একটি মামলা খারিজ করে দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল মামলা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট যা রায় দিয়েছে তাতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। ২০১০ সালের পর থেকে ওবিসি তালিকা পুরোপুরি আইন মেনে তৈরি করা হয়নি মনে করছে আদালত। তাই বিকল্প পথ বাতলে দেওয়া হয়েছিল। এবার তাও মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা গ্রহণ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর মূল মামলার ভবিষ্যৎ কী হবে সেটা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালে ওবিসি মামলার রায় নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট বলেছিল, নির্দিষ্ট সমীক্ষা না করেই এবং নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়াই কারা ওবিসি সেটা ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১০ সালের পর থেকে ওবিসি শংসাপত্র প্রাপকদের যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে সেটা ১৯৯৩ সালের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস আইনের পরিপন্থী। তাই বিকল্প পথ বাতলে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। যা না শোনার জেরে এবার আদালত অবমাননার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার।