ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই যাতে পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা থেকে সমস্ত ‘ভূত’ (ভূতুড়ে বা ভুয়ো ভোটার) বিদায় করা যায়, একইসঙ্গে যাতে একজনও বৈধ ভোটার কোনওভাবেই ভোট দানের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, তার জন্য নির্দিষ্ট রণকৌশল তৈরি করে ফেলল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
এর অগেই ভুয়ো ভোটার চিহ্নিত করার জন্য একটি কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ, ২০২৫) সেই কমিটির সদস্যরা জরুরি বৈঠকে বসেন। এদিন তৃণমূল ভবনে সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে এই বৈঠক আয়োজিত হয়। সেই বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলায় জেলায় পৃথক কোর কমিটি:
এদিনের বৈঠকে প্রাথমিক আলোচনার পর ঠিক করা হয়েছে, ভুয়ো ভোটার চিহ্নিত করতে এবং বৈধ ভোটারদের অধিকার নিশ্চিত করতে পাঁচ দফা নীতি অনুসরণ করে কাজ করা হবে। সেইসঙ্গে, প্রত্যেকটি জেলার জন্য আলাদা করে এক-একটি কোর কমিটি থাকবে। যাদের কাজই হবে ভূতুড়ে ভোটার খুঁজে বের করা। জেলাভিত্তিক এই কোর কমিটিগুলির প্রত্যেকটির সদস্য সংখ্যা হবে কমপক্ষে ১১। এই কোর কমিটিগুলি তাদের রিপোর্ট পাঠাবে রাজ্যের কোর কমিটিকে।
১৫ মার্চ ফের বৈঠকে বসবে কোর কমিটি:
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১৫ মার্চ ফের একটি বৈঠক হবে। তবে, সেই বৈঠক করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং সেই বৈঠকে মমতার তৈরি করে দেওয়া কোর কমিটির সদস্যরা ভার্চুয়ালি যোগদান করবেন। সেই বৈঠকে জেলা থেকে আসার ভূতুড়ে ভোটার সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করা হবে। তারপর সেই সমস্ত কিছু পাঠানো হবে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
‘ভূত’ বাছতে তৃণমূলের পঞ্চবাণ:
এদিনের বৈঠকে স্থির করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সর্বশেষ যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেই তালিকা থেকে ভূতুড়ে ভোটারদের চিহ্নিত করতে পাঁচটি উপায় অবলম্বন করা হবে। যেমন –
১) পশ্চিমবঙ্গে ভোট দানের অধিকার নেই, ভোটার তালিকায় থাকা এমন নামগুলিকে আলাদা করে নথিভুক্ত করতে হবে।
২) একই এপিক নম্বরে আলাদা আলাদা ব্যক্তির নাম থাকলে তা পৃথকভাবে নথিভুক্ত করে রাখতে হবে।
৩) ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা অনুসারে, বিধানসভা ভিত্তিক প্রত্যেকটি বুথের প্রত্যেকটি পার্টের প্রত্যেক ভোটারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে ভোটার তালিকা যাচাই বা স্ক্রুটিনি করতে হবে।
৪) কোনও কারণ ছাড়াই অন্যায়ভাবে যে ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেই নামগুলি যাচাই করে, ফের সেগুলিকে যাতে তালিকাভুক্ত করা হয়, তার জন্য নথিভুক্ত করতে হবে।
৫) অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে যাঁরা ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম তুলেছেন, সেই ভোটারদের বিষয়ে বিশদে খোঁজখবর নিতে হবে এবং বিশেষভাবে নজরদারি করতে হবে।