একসময় টলিউডের ওপেন সিক্রেট ছিল সৃজিত মুখোপাধ্যায়(Srijit Mukherjee) ও ঋতাভরী চক্রবর্তীর(Ritabhari Chakraborty) ঘনিষ্ঠতা। তাঁদের সম্পর্কে যে প্রেমের রঙ লেগেছে, তা নিয়ে একটা কানাঘুষো ছিল। প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও, দুই তারকার ঘনিষ্ঠতা কখনোই নজর এড়ায়নি কারও। এরপর হঠাৎ করে যেন ভেঙে যায় সবটা। মাঝে অনেকগুলো বছর তো বন্ধ ছিল ‘মুখ দেখাদেখি’। সম্প্রতি সৃজিত আচমকাই ছবি দেন ঋতাভরীর সঙ্গে। এমনকী, অভিনেত্রীর ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার লঞ্চেও বিশেষ অতথি ছিলেন পরিচালকমশাই।
ঠিক কী হয়েছিল সৃজিত আর ঋতাভরীর মধ্যে। আদৌ কি ছিল প্রেম, আর থাকলেও তা কেনই বা ভাঙল? সম্প্রতি স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী পডকাস্টে এই নিয়ে কথা বলেন ঋতাভরী।
অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি এই নিয়ে কখনো কোথাও কথা বলিনি। ও যা ইচ্ছে বলুক। ও একটা পাগল (হাসি)! আমার কাছে ও এরকমই। আমার খুব কাছের ও। আমরা ৭-৮বছর কথা বলিনি। আবার এখন সত্যি বলতে আমরা একসঙ্গে নিজেদের বন্ধুত্বটাকে উপভোগ করছি।’
‘আমি কোনোদিন কমফোর্টেবল ফিল করিনি এটা নিয়ে কথা বলতে। সৃজিত এত বড় পাবলিক ফিগার। ওকে এক-একজন এক-একরকম চোখে দেখে। কেউ ওর ভক্ত, কেউ ওকে একেবারে সহ্য করতে পারে না। কেউ তো ওর ওপর এত রেগে, পারলে ওর গায়ে মি টু ঘষে দেয়, কেউ আবার বলে সৃজিতের মতো মানুষ হয় না… আমি সবই শুনি। আমার কাছে ও হচ্ছে গুবলু। ও এমন একজন মানুষ যাকে আমি, আমার মা খুব পছন্দ করি। মিষ্টি। খেতে ভালোবাসে। কাজ পাগল। ছবির জন্য প্রাণ দিতে পারে। ডিনার টেবিলে ওর মতো ভালো সঙ্গী আর হয় না।’, আরও বলতে শোনা গেল ঋতাভরীকে।
এমনকী সৃজিতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার দায়ও নিলেন নিজের কাঁধে। ঋতাভরী বললেন, ‘আমি ওর হৃদয় ভেঙেছি। আমি এটা নিয়ে কখনো গর্ব করব না। আমি যা করেছি সেটা ভুল। অনেকগুলো বছর আমি ভেবেছি, ও আমাকে ঘৃণা করে। আমি বিস্তারে বলব না, শুধু বলব, যা করেছি আমার ভুল ছিল (ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে, কোনো চিটিং বা ওরকম কিছু নয়, আগেই বলে দিচ্ছি)। কোনো সম্পর্ক শেষ করারও না আসলে একটা ডিগনিটি থাকে। যার যা ইচ্ছে রাগ থাক গুবলুকে নিয়ে, আমি যা করেছি সত্যি ভুল। আসলে, নিজের উপরেই বা কী রাগ করব। তখন আমার বয়স মাত্র ২৪ বছর। আমরা অনেকগুলো বছর তাই কথাই বলিনি। মাঝের বছরগুলোয় মনেও হয়েছে, ওর কোনো কাজ ভালো খুব লেগেছে, একবার ফোন-ম্যাসেজে জানাই। কিন্তু সত্যি বলতে সাহস করে উঠতে পারিনি।’
তা কী করে ঠিক হল সম্পর্ক? ঋতাভরী হাসতে হাসতে জানালেন, ‘ও খবরের কাগজে পড়েছিল, আমার আর তথাগতর (ঋতাভরীর প্রাক্তন প্রেমিক) বিয়ে। তারপর আমাকে ম্যাসেজ করেছিল, ফিশ ওরলিটা হবে তো বিয়েতে…’! সঙ্গে যোগ করেন, ‘ওই আসলে সবটা ঠিক করেছিল সবটা। তখনও উপর উপর চলছিল ব্যাপারটা। সম্প্রতি আমরা বসে সবটা মিটমাট করি বলা যেতে পারে, যে কী কী ভুল হয়েছিল।’
ঋতাভরী-সৃজিতের সম্পর্ক:
২০১৭ সালে সৃজিত ও ঋতাভরীর প্রেম নিয়ে আচমকাই চর্চা শুরু হয়েছিল। সেই সময় পরিচালক ব্যস্ত ছিলেন কাকাবাবুর শ্যুটিং নিয়ে। আর তার ফাঁকেই চলত ঋতাভরীর সঙ্গে ডিনার বা লাঞ্চ ডেট। শুধু তাই নয়, সেই সময় ঋতাভরী মুম্বইতে প্রায়ই যেতেন একাধিক শ্যুটের কাজে। তাঁকে বিমানবন্দর থেকে আনতে যেতেন খোদ পরিচালক। সেই বছর ঋতাভরীর জন্মদিনের পার্টিতেও সৃজিতের উপস্থিতি ছিল উজ্জ্বল। গলা জড়িয়ে দুজন ছবিও তুলেছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে সৃজিত-ঋতাভরী রসায়ন কারোরই চোখ এড়ায়নি। তবে আচমকাই বছর দুই পড় সবটা ভেঙে যায়। শোনা যায়, এর জেরে নাকি ‘উমা’ থেকেও বাদ পড়েন ঋতাভরী। তবে অভিনেত্রী প্রকাশ্যে কখনোই কথা বলেননি এই নিয়ে।