উত্তর আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তির অধীনে আপাতত কানাডার ওপর শুল্ক চাপাবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump) সুর নরম করতেই কানাডাও বড় সিদ্ধান্ত নিল। ১২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর যে পালটা শুল্ক কানাডা আরোপ করতে চলেছিল, তা তারা বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কানাডার অর্থমন্ত্রী ডমিনিক লেব্লঁ এই ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, অবৈধ অভিবাসন ও ফেন্টানিল পাচার নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগের কারণে কানাডা থেকে জ্বালানি আমদানিতে ১০ শতাংশ এবং অন্য সবকিছুর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। তবে আপাতত ১ মাসের জন্যে কানাডার কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। এদিকে কানাডার পণ্যে মার্কিন শুল্ক আরোপের পরই প্রসাধনী, যন্ত্রপাতি, টায়ার, ফল এবং ওয়াইন সহ ৩০ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার মূল্যের মার্কিন আমদানিতে তাত্ক্ষণিকভাবে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ট্রুডো সরকার। এরই সঙ্গে ট্রুডো ঘোষণা করেছিলেন, ২১ দিনের মধ্যে আরও ১২৫ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তবে ট্রাম্প কিছু কানাডিয়ান পণ্যে শুল্ক স্থগিত করায় আপাতত ‘দ্বিতীয় দফার’ শুল্ক আরোপের বিষয়টি থেকে বিরত থাকবে কানাডা। তবে প্রথম দফায় যে ৩০ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে ট্রুডো প্রশাসনের আধিকারিকরা।
এই সবের মাঝেই ফোনে কথা হয়েছে ট্রাম্প এবং ট্রুডোর। তারপরই ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁদের ফোনের কথাবার্তা বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। তারপরই তিনি অভিযোগ করেন, শুল্ক নীতিকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন ট্রুডো। উল্লেখ্য, আমেরিকার সঙ্গে কানাডার শুল্ক লড়াই শুরুর পর থেকে সেই দেশে জাতীয় পতাকা বিক্রি বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণে। একটি আইস হকি ম্যাচের আগে মার্কিন জাতীয় সঙ্গীতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিতেও দেখা গিয়েছিল কানাডার দর্শকদের তরফ থেকে। এই আবহে কানাডার একাংশে একটি আমেরিকা বিরোধী জনমত তৈরি হচ্ছে ধীরে ধীরে।
এর আগে কানাডার পালটা শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণার পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গভর্নর’ আখ্যা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরই সঙ্গে কানাডার ওপর প্রতিশোধ হিসেবে আরও শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এই নিয়ে ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘দয়া করে কানাডার গভর্নর ট্রুডোকে ব্যাখ্যা করুন যে, তিনি যখন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করবেন, আমাদের পারস্পরিক শুল্ক তাৎক্ষণিকভাবে একই পরিমাণ বাড়বে।’ উল্লেখ্য, ট্রুডোকে এর আগেও ‘গভর্নর’ আখ্যা দিয়ে কানাডাকে ‘৫১তম মার্কিন স্টেট’ করার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। এই আবহে প্রতিবেশী মিত্র রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীকে বারংবার ‘অপমান’ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।