কারোর বয়স ৬২, কারোর বয়স ৫৮, আবার কারোর বয়স ৫২,আবার কারোর কারোর ৪০ এর উপর।স্বামী, ছেলে, মেয়ে,শ্বশুর,শাশুড়ি এমনকি নাতি নাতনি নিয়ে ভরা সংসারে থাকেন এনারা। কেউ করেন ব্যবসা, কেউ করেন চাকরি আবার কেউ কেউ গৃহবধূ। তাতে কি? শখপূরণ করব না? নিজের কি ইচ্ছা থাকতে পারে না? হ্যাঁ ইচ্ছা।জিন্দেগী নাহ মিলেঙ্গে দোবারা। ঠিক এই কথাটা মেনেই বিশ্ব জয়ের নেশায় ছুঁটছে একদল মহিলারা। বয়স খুব যে কম তাও নয়, ভরা সংসারের সাথে পাল্লা দিয়ে চুটিয়ে পাহাড়, পর্বত ঘুরে বেড়াচ্ছেন সুকৃতি নন্দী, ডলি বিশ্বাস থোমাস, সুদীপ্তা সাহা বিশ্বাস, বৈশাখী দাস বিশ্বাস, ব্রততী পাঁজা মিদ্যা, শম্পা রাই, রঞ্জিতা রায়চৌধুরী।
স্কুটার চালিয়ে গোটা সিকিম ঘুরে এসেছেন তারা।৭ জনের মধ্যে ৬ জন মহিলার স্কুটি। আর একজনের রয়্যাল এনফিল্ড। তারা একইসাথে দার্জিলিং, নেপাল(Nepal), রাঁচি(Ranchi), কেওনঝড়, পুরুলিয়া(Purulia), বাঁকুড়া(Bankura), পত্রাতু ভ্যালি ইত্যাদি নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। এরপর যাবেন ভাইজাগ। ভয়, ডরকে তোয়াক্কা না করে একসাথেই গোটা দেশ ঘুরে বেড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন তারা। গত জানুয়ারি মাসেই তারা সিকিম বেড়াতে যান স্কুটি চালিয়ে। আর সেই যাত্রায় নানা অভিজ্ঞতার শিকার হোন তারা। ভালো প্রচুর অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করার সাথে সাথে পাহাড়ি রাস্তার বেহাল পরিস্থিতিরও সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাদের। তবুও পিছন ফিরে তাকাননি তারা। সব বাধা অতিক্রম করে সিকিমে চুটিয়ে মজা করেছেন উড়ানের দল। তাদের সংগঠনের নাম উড়ান। আর এই উড়ানে মহিলাদের সংখ্যা প্রায় ১০০ এর উপর। তারা সবাই স্কুটি চালিয়ে নানা জায়গায় ঘুরতে যান।
কারোর বাড়িতে আপত্তি আবার কারোর বাড়িতে সম্মতি, প্রথমে বাড়ি থেকে আপত্তি জানালেও পরে একা স্কুটি চালিয়ে ভ্রমণে বেরিয়ে যেতে বলেন পরিবারের সদস্যরা। আবার কারোর ছেলে মাকে উড়তে সম্মতি দেয়, উৎসাহ জোগায়, মা কেন পারবে না? হ্যাঁ মাও পারবে। মা পারবে দু চাকা চালিয়ে পাহাড় ঘুরতে। ব্যাস মনের জোড় নিয়ে মায়েরা বেরিয়ে পড়ে দেশ ভ্রমণে। মনে সাহস থাকলে যে কোনও বাধাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না তা প্রমাণ করছেন এনারা। মহিলারা আজ আর পিছিয়ে নেই, আজ আর অবহেলিত হন না তারা। পুরুষের সাথে টক্কর দিয়ে বাইক, স্কুটি চালিয়ে দেশ বিদেশ ঘুরছেন, তার জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ উড়ানের মহিলা সদস্যরা।
তারা কেউ থাকেন চুঁচুড়া, কেউ থাকেন কাঁচরাপাড়া কেউ কসবা, কেউ কামালগাজি, কেউ থাকেন আরামবাগ, কেউ থাকেন গড়িয়া, বিভিন্ন জায়গায় থাকলে কি হবে, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে তারা প্রত্যেকেই একে অপরের সাথে বাধা। তাদের ওড়ার ইচ্ছে এক, নিজেদের জীবনকে নিজেদের মতন করে বাঁচতে এনারা জানেন ,যার কারণে দিন সময় স্থির করে ঠিক একই সাথে সাড়া দিয়ে বেড়িয়ে পড়েন প্রকৃতি অনুভব করবেন বলে।
এনাদের এমন সাহস ও মনের জোড়কে ইনিউজবাংলার তরফ থেকে কুর্নিশ জানাই। বহু মহিলারা মনের ইচ্ছে থাকলেও পারিবারিক অশান্তির কারণে বেড়াতে পারেন না,এমন কেউ যদি উড়ানের হাত ধরে একা স্কুটি নিয়ে বেড়িয়ে পড়তে চান তাহলে অবশ্যই সুকৃতি দেবীর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। মনে সাহস নিয়ে একবার প্রকৃতিকে অনুভব করতে বেড়িয়ে পড়ুন, একবার বেড়িয়ে পড়লে দেখবেন আর কোনও বাধাই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না সামনে।একটাই জীবন, আর এই জীবনকে অনুভব করতে ,নিজেকে সময় দিতে চাইলে অবশ্যই সুকৃতি দেবী, ডলি দেবী এনাদের হাত ধরুন।ভিডিওটি ভালো লাগলে অন্যকে দেখার সুযোগ করে দেবেন।