একের পর এক এক শৃঙ্গ জয়ের পর এবার জয় করলেন পৃথিবীর উচ্চতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ‘ওজোস দেল সালাডো’। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে বুধবার আর্জেন্টিনা-চিলি সীমান্তে অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরির চূড়ায় উঠতে সফল হন হুগলির হিন্দমোটরের বাসিন্দা শুভম চট্টোপাধ্যায়। সেখানে পৌঁছানোর পরে তিনি ভারতীয় পতাকা ওড়ান।
এর আগে একাধিক এক শৃঙ্গ জয় করে রেকর্ড গড়েছেন বছর ২৭-এর শুভম। রাশিয়ার মাউন্ট এলব্রুস পর্বত জয় করে রেকর্ড করেছিলেন তিনি। শুভম মাউন্টেনিয়ার রনি নামেও পরিচিত। তাঁর এই সাফল্যে খুশি পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশিরা। জানা গিয়েছে, ছোট থেকেই পাহাড়ের প্রতি ঝোঁক ছিল শুভমের। একটু বড় হওয়ার পরেই শুভম পাহাড়ে ওঠার জন্য প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন। আর প্রশিক্ষণ শেষ হতেই একের পর এক বিভিন্ন পাহাড়ে অভিযান চালান।
উল্লেখ্য, ওজোস দেল সালাডো আর্জেন্টিনা – চিলি সীমান্তে আন্দিজ পর্বতমালায় অবস্থিত একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরি। এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি এবং চিলির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। ওজোস দেল সালাদোর উপরের অংশে বেশ কয়েকটি লাভা গম্বুজ, লাভা প্রবাহ এবং আগ্নেয়গিরির গর্ত রয়েছে। তার মধ্যে বরফের আচ্ছাদন রয়েছে। এই এলাকা ৭০-১৬০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এর সর্বোচ্চ চূড়া সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬,৮৯৩ মিটার বা ২২,৬১৫ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। ওজোস দেল সালাদোর চারপাশে আরও অসংখ্য আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এই আগ্নেয়গিরিতে অত্যন্ত কম অক্সিজেন রয়েছে। তাছাড়া আবহাওয়া হল শুষ্ক। সেই প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে টানা ১১ ঘণ্টা অতিক্রম করে বুধবার শুভম আগ্নেয়গিরি জয় করেন।
উল্লেখ্য, প্রথমবার এই আগ্নেয়গিরিতে সফল আরোহণ করেছিল পোল্যান্ডের একটি দল। সেটি ছিল ১৯৩৭ সালে। এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ থেকে তিন জন পর্বতারোহী এই আগ্নেয়গিরিতে উঠেছিলেন। তাঁরা হলেন ঘাটালের আবির হুদাইত, বাগনানের জগদ্বন্ধু মান্না এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন চিরাগ মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও ঠাকুরপুকুরের সত্যরূপ সিদ্ধান্ত এর আগে ওজোস দেল সালাডো জয় করেছেন ।প্রসঙ্গত, ওজোস দেল সালাডো হল স্প্যানিশ শব্দবন্ধ। এর অর্থ হল লবণের চোখ। তথ্য অনুযায়ী, এই আগ্নেয়গিরিতে শেষ বার আগ্নেয় বিস্ফোরণ হয়েছিল প্রায় ১৩০০ বছর আগে। তবে ১৯৯৩ সালে এই আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা নির্গমন হয়। তার পরিমাণ সামান্য ছিল বলেই জানা যায়।