Kasba Deaths। ঋণের বিনিময়ে মোটা কমিশন! কসবা কাণ্ডে গ্রেফতার আরও ১

Spread the love

কসবায় এক দম্পতি ও তাঁদের আড়াই বছরের ছেলের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই নিয়ে এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়ে হল চার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় চতুর্থ যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর নাম সোমশুভ্র মণ্ডল।

দাবি করা হচ্ছে, প্রয়াত রায় দম্পতিকে এই সোমশুভ্রও বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও অ্যাপ থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। বদলে মোটা টাকার আর্থিক কমিশন আদায় করেছিলেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গ্রেফতার করার আগেই সোমশুভ্রকে দীর্ঘক্ষণ একটানা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তারপরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। প্রসঙ্গত, এর আগে এই ঘটনায় প্রয়াত সোমনাথ রায়ের মামা ও মামী এবং চঞ্চল মুখোপাধ্যায় নামে এক লোন রিকভারি এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

ধৃত সকলের বিরুদ্ধেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু, সোমনাথের মামা ও মামী আগেই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। যদিও পুলিশ সমস্ত দাবি ও পালটা দাবি খতিয়ে দেখছে।

উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ (২০২৫) কসবার হালতু এলাকার পূর্বপল্লির একটি বাড়ি থেকে সোমনাথ রায় ও তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সবথেকে মর্মান্তিক হল – সোমনাথের ঝুলন্ত দেহের সঙ্গেই ওড়নার দিয়ে শক্ত করে বাঁধা ছিল রায় দম্পতির আড়াই বছরের শিশু পুত্রের দেহ।

এখনও পর্যন্ত পুলিশের তদন্ত যত দূর এগিয়েছে, তাতে অনুমান করা হচ্ছে, মূলত ঋণের বোঝা সহ্য করতে না পেরেই প্রথমে আড়াই বছরের ছেলেকে খুন করেন রায় দম্পতি। তারপর নিজেরা আত্মঘাতী হন।

প্রসঙ্গত, হালতুতে যে বাড়িতে রায় দম্পতি থাকতেন, সেটি আসলে সোমনাথের মামাবাড়ি। সোমনাথ নিজে অটোচালক ছিলেন। তিনি অসুস্থ ছিলেন। ফলে টাকার প্রয়োজন ছিল। সেইসঙ্গে, ছেলের চিকিৎসার জন্যও টাকার প্রয়োজন ছিল।

এই অবস্থায় একটি ব্যাঙ্ক থেকে ১০ লক্ষ টাকা ধার করেন সোমনাথ। কিন্তু, সেই ঋণের কিস্তি তিনি মেটাতে পারছিলেন না। এই কারণেই চঞ্চল মুখোপাধ্যায় নামে ওই লোন রিকভারি এজেন্ট তাঁদের অপমান করেছিলেন বলে অভিযোগ।

এছাড়াও, এখন শোনা যাচ্ছে, স্থানীয় অটো ইউনিয়ন থেকেও ৮ হাজার টাকা ধার করেছিলেন সোমনাথ। দাবি করা হচ্ছে, সেই টাকা তিনি নিয়েছিলেন ছেলের চিকিৎসার জন্য। যদিও মৃত্যুর আগে ওই ৮ হাজার টাকা তিনি ফিরিয়ে দেন।

সূত্রের দাবি, বাজারে বাকি যে ১০ লক্ষাধিক টাকা ধার পড়েছিল, তা মেটাতে প্রথমে নিজের অটো বিক্রি করেন সোমনাথ। পরে যে বাড়িতে তাঁরা থাকতেন, সেটাও বিক্রির পরিকল্পনা করেন। কিন্তু, তাঁর মামা-মামী তাতে রাজি ছিলেন না। তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে অশান্তি চলছিল। প্রতিবেশীরা নাকি এমনটাই জানিয়েছেন।

এই ঘটনায় যে ‘সুইসাইড নোট’ (দেওয়ালের লেখা কিছু নাম ও তথ্য বলে দাবি করা হচ্ছে) পাওয়া গিয়েছে, সেখানেই সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের কথা, এবং সোমনাথের মামা-মামী ও লোন রিকভারির এজেন্টে নাম লেখা ছিল বলে জানা গিয়েছে। পরবর্তীতে এই ঘটনায় সোমশুভ্রেরও হদিশ পায় পুলিশ। শোনা যাচ্ছে, ওই সুইসাইড নোটে তাঁরও নাম ছিল। একে-একে এই চারজনকেই গ্রেফতার করা হয়।

কিন্তু, এখনও পর্যন্ত এটা সম্পষ্ট নয় যে ১০ লক্ষাধিক টাকা ধার নিয়ে রায় দম্পতি ঠিক কী করেছিলেন! এত টাকা তাঁরা কোথায় খরচ করলেন? সব টাকাই কি চিকিৎসায় খরচ করা হয়েছে? নাকি অন্য কোনও কারণে এত বিপুল পরিমাণ টাকা ধার করতে হয়েছিল সোমনাথ রায়কে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *