মহিলাদের একটা খুন করার অনুমতি দেওয়া হোক। এমনই দাবি তুললেন এনসিপির (শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী) নেত্রী রোহিণী একনাথরাও খাড়সে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে লেখা চিঠিতে রোহিণী দাবি করেছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মহিলাদের বিরুদ্ধে যেভাবে অপরাধের ঘটনা বাড়ছে, তাতে তাঁদের একটা খুনের অনুমতি দেওয়া হোক। যেক্ষেত্রে মহিলাদের কোনওরকম শাস্তি দেওয়া যাবে না। সম্প্রতি মুম্বইয়ে ১২ বছরের এক কিশোরীর গণধর্ষণের যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা উল্লেখ করে শরদ গোষ্ঠীর মহিলা ব্রিগেডের সভানেত্রী জানিয়েছেন, মহিলারা ‘অত্যাচারী মানসিকতা’ এবং ‘ধর্ষণের মানসিকতা’-কে হত্যা করতে চান।
‘প্রতিটা দিন যাচ্ছে, আর অপরাধের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে’
সেই বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে রোহিণী জানিয়েছেন, বিশ্ব জনসংখ্যা পর্যালোচনার তরফে যে সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে এশিয়ায় মহিলাদের জন্য সবথেকে নিরাপত্তাহীন দেশ হিসেবে ভারতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অপহরণ, গার্হস্থ্য হিংসা-সহ বিভিন্ন গুরুতর ঘটনার কথা তুলে ধরা হয়েছে ওই রিপোর্টে। প্রতিটা দিন যাচ্ছে, আর অপরাধের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। দু’দিন আগেই মুম্বইয়ে এক ১২ বছরের কিশোরীর উপরে ভয়ংকর অত্যাচার চালানো হয়েছে। ভাবা যায়? ১২ বছরের কিশোরীকে এরকম অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।
মহারানিরা নিজেদের হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন, উদাহরণ দেন রোহিণী
সেই পরিস্থিতিতে মহিলাদের বিনা শাস্তিতে একটা খুনের অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন এনসিপি নেত্রী। তিনি বলেছেন, ‘মাননীয় রাষ্ট্রপতি, যখন রাজ্যপাট এবং লোকজন বিপদের মুখে ছিলেন, তখন তাঁদের রক্ষা করতে নিজেদের হাতে তরোয়াল তুলে নিয়েছিলেন মহারানি তারাবাই এবং দেবী অহিল্যাবাই হোলকাররা। সমাজ সংস্কারের জন্য আমরা যে লড়াই করছি, সেটার জন্য কেন চুপ করে থাকব?’
কিন্তু সেই পরিস্থিতিতেও যে বিনা শাস্তিতে মহিলাদের একটা খুনের অনুমতি প্রদানের আর্জি জানিয়েছেন, সেটার জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন এনসিপি নেত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ গৌতম বুদ্ধ এবং মহাত্মা গান্ধীর জায়গা হিসেবে পরিচিত। তাঁরা শান্তি এবং অহিংসার মূর্ত প্রতীক। কিন্তু অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে এই আবেদনের জন্য ক্ষমা চাইছি। যে বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
রোহিণীর দাবি নিয়ে কী বলল শিবসেনা?
যদিও রোহিণীর সেই দাবি নিয়ে পালটা প্রশ্ন ছুড়েছেন শিবসেনা নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী গুলাবরাও পাটিল। তিনি দাবি করেছেন, রোহিণীর প্রথমে বলা উচিত যে কাকে খুন করা উচিত। যদিও শিবসেনার নেত্রী মনীষা কায়নাড়ে দাবি করেছেন, রোহিণী সম্ভবত কিছু লোকের মধ্যে থাকা কয়েকটি প্রবৃত্তিকে হত্যা করার কথা বলেছেন। সম্প্রতি যা যা ঘটনা ঘটেছে, সেটা থেকেই সম্ভবত এরকম ভাবাবেগ তৈরি হয়েছে।