রান্নার গ্যাসের দাম বাড়লে গৃহস্থদের হেঁসেলে আর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এখনও রান্নার গ্যাসের দাম প্রায় সাড়ে ৮০০ টাকা ছুঁইছুঁই। অনেকেই আজও একটা সিলিন্ডারে মাস চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একমাস চলে না রান্নার গ্যাস। তার আগেই ফুরিয়ে যায়। তাই বুকিং করতে হয় রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের। আর বুকিং করার সঙ্গে সঙ্গেই যে গ্যাস সিলিন্ডার হাজির হয় তা নয়। এক’দুদিন সময় নিয়ে নেয়। তখন গৃহকর্ত্রীদের বেজায় সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে যাঁদের একটি সিলিন্ডার। যাঁদের দুটি সিলিন্ডার তাঁদের একটু রেহাই মেলে। এই আবহে জুন মাস থেকেই পাইপড ন্যাচারাল গ্যাস গৃহস্থদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতি জোরদার করছে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি (বিজিসি)।
এদিকে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ওঠানামা করে। তাতে পকেটে চাপ পড়ে গৃহস্থ মধ্যবিত্তের। সেখানে বিজিসি যে পাইপের মাধ্যমে গ্যাস দেবে তা তুলনায় অনেকটা সস্তা। সেক্ষেত্রে পকেটে বাড়তি চাপ পড়বে না। আর রান্না করতে গিয়ে গ্যাস শেষ হয়ে গেলে গৃহকর্ত্রীদের কপালে ভাঁজ পড়বে না। এমন তথ্যই জানা গিয়েছে। কল্যাণী বা চন্দননগরে এই পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের কাজ শুরু হবে। তারপর ধাপে ধাপে পাইপলাইন যেমন এগোবে তেমন এলাকায় গৃহস্থদের বাড়িতে পৌঁছে যাবে বেঙ্গল গ্যাস। এই পরিষেবা চালু হয়ে গেলে বাংলার মানুষের বিরাট উপকার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কলকাতায় কবে বাড়ি বাড়ি পাইপের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস পৌঁছে যাবে তা নিয়ে এখন চূড়ান্ত কিছু জানা যায়নি। সময় লাগবে।
অন্যদিকে পাইপ বসানোর কাজ অনেকদিন ধরেই শুরু হয়েছে। এবার তা সরবরাহ করার পালা। আর এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে কলকাতাতেও পাইপের মাধ্যমে গ্যাস পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলায় আগে হচ্ছে। তাই কল্যাণী এবং হগলির চন্দননগরে গ্যাস সরবরাহ করার পাইপ বসানো এখন প্রায় সম্পন্ন। আর বিজিসি’র দুটি সিটি গেট স্টেশন করা হয়েছে গয়েশপুর এবং মগরাতে। এই দুটি জায়গাই কল্যাণী এবং চন্দননগরের কাছে। তাই গ্যাস পৌঁছে দেওয়া খুব কঠিন কাজ নয়। নদিয়ার একটা বড় অংশ এবং হুগলি জেলার একটা বড় অংশ পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস পাবে। যা মধ্যবিত্তের কাছে বড় পাওয়া।
এছাড়া এই পরিষেবার সূচনা করতে ইতিমধ্যেই সমস্ত পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এবার জেলা থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে প্রবেশ করবে শহরে বলে জানান বিজিসি’র সিইও অনুপম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবর্ষে প্রায় ৩০ হাজার বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। দ্রুত পাইপ বসানোর কাজ চলছে। যা শেষ হলেই গ্যাসের সংযোগ দিতে প্রচার করা হবে।’ এই বিজিসি কলকাতা এবং তার সংলগ্ন দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং নদিয়ার বড় অংশে পাইপলাইন বসিয়ে বাড়ি বাড়ি গ্যাস পৌঁছে দিতে চায়। তার খানিকটা কাজ জুন মাস থেকে দেখা যাবে।