৮ মার্চ দেশজুড়ে পালিত হয়েছে নারী দিবস। এদিন কলকাতাতেও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়েছে। কালীঘাটে আয়োজিত এমনই এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের স্ত্রী, অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। সেখানেই নারী দিবস নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন শ্রীময়ী।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে শ্রীময়ী চট্টরাজ বলেন, ‘আমার মনে হয় নারী দিবসটা প্রত্যেক দিনের হওয়া উচিত। আমরা একটা দিন নারীদের সম্মান করছি, মঞ্চে ডেকে উত্তরীয়, মোমেন্টো দিচ্ছি। আমার মনে হয় নারী দিবস সেদিনই প্রকৃতভবে হবে, যেদিন প্রতিটা নারীকে প্রত্যেকদিন সম্মানিত করা হবে। আমার কাছে নারীর অর্থ হিসাবে আমি আমার মায়ের দিকে দেখে এসেছি। আমার মা প্রত্যেকদিন কাঁধে ব্য়াগ নিয়ে কাজে যান না, অফিসে যান না, কোনও বেতন পান না। তবে আমার মা ২৪*৭ এর ডিউটি নিঃস্বার্থভাবে পালন করেন পরিবারের জন্য। আমার পরিবারে মা দুই বোনকে মানুষ করেছেন, আমার বাবা কখন অফিস যাবেন, সেই মতো টিফিন করে দেওয়া থেকে শুরু সকাল থেকে বাড়ির সমস্ত কাজ করে চলেছেন। তাহলে সেই নারীকে কি আমরা সম্মান দেব না?’
এখানেই শেষ নয়, শ্রীময়ীর কথায়, ‘আর আমার তো মনে হয়, আমার বাড়িতে যে পরিচারিকা, যিনি কাজের দিদি, তাঁদের জন্য়ও নারী দিবস হওয়া উচিত। কারণ, তাঁদের জন্য স্পেশাল কোনও অ্যওয়ার্ড হয় না। তাঁদের জন্য স্পেশাল কোনও অনুষ্ঠান হয় না।’
শ্রীময়ী বলেন, ‘আমিও একজন নারী, কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছি। আমি তো চাইব আমার মেয়েও নিজের পায়ে দাঁড়াক। আমি আজ সমস্ত পুরুষদের বলব, যাঁরা ভাই, বাবা কিংবা স্বামী, তাঁদের বলব, নারীদের সম্মান দিন, সেটাই তাঁদের কাছে সেরা পাওনা।’
শ্রীময়ী বলেন, ‘আমিও উত্তর কলকাতার রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে। আমার বাড়িতে বা আমার মাও এত প্রেস, মিডিয়া, এত সোশ্যাল মিডিয়া কেউ দেখতে অভ্যস্ত নন। তিনিও যখন আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় এত কুৎসা দেখেন, তাঁর চোখে থেকেও জল পড়ে। তবে সেই জায়গা থেকে আমার বাঁচার আশাই আজ আমাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। আমিও যখন কাঞ্চনকে বিয়ে করার কথা ভাবি, তখন বলেছিলাম, সোনা-গয়না নয়, আমাকে যেটা দিতে হবে, সেটা সম্মান। যেখানে আমি মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারব। এখানে বসে থাকা প্রত্যেক পুরুষকে তাই বলব, স্ত্রীদের টেকেন ফর গ্রান্টেড ভাববেন না। আর বলব, কোনও ঘটনা ঘটলে ফেসবুকে না লিখে, রাস্তাঘাটে যখন ঘটনা ঘটে তখন এগিয়ে যান, চিৎকার করুন…। কিছু ঘটে যাওয়ার পর মোমবাতি মিছিল করে লাভ নেই। সকলের কাছে আমার বিনীত আবেদন, মান আর হুঁশ টাকে বাঁচান, কারণ, আমরা মানুষ…।’