হিংসা ও সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভারতীয় স্কলারের ভিসা বাতিল করল মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট (ডিএইচএস) জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনার শিক্ষার্থী রঞ্জনি শ্রীনিবাসন সিবিপি হোম অ্যাপ ব্যবহার করে স্বেচ্ছা নির্বাসনে আমেরিকা ছেড়েছেন। ভারতের নাগরিক রঞ্জনি শ্রীনিবাসন এফ-১ স্টুডেন্ট ভিসায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নগর পরিকল্পনায় ডক্টরাল ছাত্রী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্যালেস্তিনীয় সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে সমর্থন করেন এবং সেই সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
মার্কিন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই নিয়ে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ৫ মার্চ স্টেট ডিপার্টমেন্ট শ্রীনিবাসনের ভিসা বাতিল করে। ১১ মার্চ সিবিপি হোম অ্যাপ ব্যবহার করে তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাসনে গিয়েছেন। সেই ভিডিয়ো ফুটেজ পেয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ। এদিকে শ্রীনিবাসন যে সহিংসতার পক্ষে সওয়াল করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ তাদের কাছে আছে কি না, তা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জানাননি মার্কিন কর্মকর্তারা। এই বিতর্কের মাঝে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও পড়াশোনার জন্য ভিসা পাওয়াটা সৌভাগ্যের বিষয়। তিনি বলেন, ‘আমেরিকায় বসবাস ও পড়াশোনার ভিসা পাওয়াটা সৌভাগ্যের বিষয়। আপনি যখন সহিংসতা এবং সন্ত্রাসবাদের পক্ষে কথা বলেন তখন সেই বিশেষাধিকার প্রত্যাহার করা উচিত এবং আপনার এই দেশে থাকা উচিত নয়। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী, যিনি সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন, তিনি সিবিপি হোম অ্যাপ ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত হয়েছেন দেখে আমি আনন্দিত।’
এর আগে হামাসের সমর্থনকারী বিদেশি পড়ুয়াদের চিহ্নিত করে তাঁদের ভিসা বাতিলের জন্যে এআই ব্যবহার করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল আমেরিকার বিদেশ দফতর। এআই ব্যবহার করে বিদেশি পড়ুয়াদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ‘স্ক্যান’ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল আমেরিকা। উল্লেখ্য, গত বছর গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছাত্র বিক্ষোভে দেশজুড়ে ক্যাম্পাসগুলি কেঁপে উঠেছিল। কয়েকটি ক্যাম্পাসে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সংঘর্ষ বেঁধেছিল। এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে তারা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেডারেল তহবিল থেকে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার প্রত্যাহার করবে। মার্কিন মুলুকের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলিতে ইহুদি পড়ুয়াদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এদিকে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করার অভিযোগে সম্প্রতি দ্বিতীয় একজনকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। ধৃতের নাম লিকা কোরদিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার কম থাকায় ২০২২ সালেই তাঁর ভিসা বাতিল করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি আমেরিকায় থেকে গিয়েছিলেন।