বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা(Sheikh Hasina) ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে এসেছিলেন। বাংলাদেশের বহু প্রাক্তন সাংসদ এবং রাজনৈতিক নেতাও নিজেদের দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এই সময়কালে। অভিযোগ করা হচ্ছে, এমনই ভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন শেখ হাসিনার খুড়তুতো ভাই তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন সাংসদ শেখ সালাহউদ্দিন ওরফে শেখ জুয়েল। তিনি ভারতে আছেন বলে সম্প্রতি দাবি করা হয় বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে। শুধু তাই নয়, ভারতে হিন্দু নামে তিনি আধার কার্ড করিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে দৈনিক জনকণ্ঠ সহ বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের একাধিক রিপোর্টে। এদিকে এই সংক্রান্ত অভিযোগ উঠলেও ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। এমনকী বাংলাদেশ সরকারও এই নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি।
বাংলাদেশের মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, শেখ জুয়েল নাকি ভারতে ‘বিধান মল্লিক’ নামে আধার কার্ড করিয়েছেন। সেই ‘তথাকথিত’ আধার কার্ডের ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাংলদেশের প্রাক্তন এক শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্তাও সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন সম্প্রতি। ভাইরাল হওয়া সেই আধার কার্ডের সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। তবে সেই ভাইরাল ছবি অনুযায়ী, জনৈক বিধান মল্লিকের বাবার নাম – মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক। এবং বিধানবাবুর জন্ম তারিখ ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি। অভিযোগ, জুয়েলের বড় ভাই শেখ হেলাল, শেখ সোহেল এবং ছোট ভাই শেখ রুবেলও ভারতে বসবাস করছেন।
এদিকে বাংলাদেশের শেখ জুয়েলের আইডি কার্ড অনুযায়ী, তাঁর জন্ম ১৯৬৭ সালের ১ জানুয়ারি। তাঁর বাবার নাম শেখ আবু নাসের। মায়ের নাম রাজিয়া খাতুন। ঠিকানা বাসা-৩৬৩, গ্রাম/রাস্তা- শেরেবাংলা রোড, ডাকঘর-সোনাডাঙ্গা-৯১০০। সোনাডাঙ্গা, খুলনা। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রথমবার খুলনা ২ আসন থেকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন জুয়েল। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও তিনি আওয়ামি লিগের টিকিটে জিতেছিলেন ভোটে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন শেখ হাসিনা। এরপর সেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয় মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে। আর মহম্মদ ইউনুস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবার এবং প্রাক্তন আওয়ামি লিগ নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এই আবহে বাংলাদেশ সকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। অপরদিকে গুম-খুনের মামলায় মুজিবকন্যার বিরুদ্ধে জারি করা হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এই সবের মাঝেই নাকি ভারতে থাকার জন্যে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে মোদী সরকার। তবে হাসিনাকে সরকারি ভাবে ভারতে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়া হবে না বলে জানা গিয়েছে। কারণ এই সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট আইন নেই ভারতে। তবে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করে বৈধ ভাবে তাঁকে ভারতে থাকতে দিতে সম্মত মোদী সরকার। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নাকি ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধিতে সবুজ সংকেত দেয়। এরপরই স্থানীয় ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের মাধ্যমে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বা ভারতে থাকার অনুমতির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। যদিও ইউনুস চাইছেন হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে তাঁর বিচার করতে।