প্রাক্তন মার্কিন কূটনীতিক জন ড্যানিলোউইচের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বাক্য বিনিময়’ হল বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত হারুন আল রশিদের। উল্লেখ্য, মরোক্কোতে এর আগে নিযুক্ত থাকা হারুন বর্তমানে কানাডায় আছেন। তাঁকে ইউনুস সরকার বাংলাদেশে ফিরতে বললেও তিনি ফেরেননি। তাই তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। এদিকে হারুন ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগে গিয়েছেন। এই আবহে হাসিনা বিরোধী হিসেবে পরিচিত অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন কূটনীতিক জন ড্যানিলোউইচ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে হারুনকে খোঁচা দিয়েছিলেন।
পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর ইউনুসকে তোপ দেগে দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছিলেন হারুন। সেখানে ড্যানিলোউইচ লিখেছিলেন, ‘বোঝা যাচ্ছে যে আপনি ভুল লোকের ওপর নিজের বাজি ধরেছিলেন এবং এখন আপনি কানাডায় নিজের আশ্রয়ের আবেদন সাজাচ্ছেন। এই পোস্ট আপনার আবেদনের এক্সিবিট ‘এ’। তবে জুলাই এবং অগস্টে যখন তৎকালীন সরকার ছোট ছোট বাচ্চাদের মারছিল, তখনকার কোনও পোস্ট আমি দেখতে চাই। এবং সেই সরকারের গোপন নির্যাতন সেলের সমালোচনামূলক কোনও পোস্ট যদি আপনি আগে করে থাকেন, সেটাও আমি দেখতে চাই। আমার জীবনে এমন অনেক বাংলাদেশি কূটনীতিবিদদের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে যারা ১৯৭১ সালে নিজের দেশের পক্ষ নিয়েছিলেন। কেএম শাহাবুদ্দিনের মতো কূটনীতিবিদরা হিরো ছিলেন। আমি এমন কোনও প্রমাণ দেখিনি যে আপনি তেমন কোনও হিরো।’
আর এরপরই ড্যানিলোউইচের দুর্বল স্থানে আঘাত করেন হারুন। তিনি মার্কিনিকে সংক্ষিপ্ত জবাবে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি যে গত সপ্তাহে ইউনুসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, সেই সফরের টাকা কে দিয়েছিল? এত কম বিচারবুদ্ধি নিয়ে এই বিপুল নগদ প্রবাহ আর কোথায় পেতে পারেন আপনি?’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জন এবং প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিমায় আর মিলাম বাংলদেশে গিয়েছিলেন। সেখানে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আগের সরকারের বিরুদ্ধে কথাও বলেছিলেন তাঁরা। এই আবহে ড্যানিলোউইচ হারুনকে জবাবে জানান, রাইট টু ফ্রিডম নামক সংগঠন তাঁর বাংলাদেশ সফরের জন্যে টাকা দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ‘দৃশ্যপট শক্তিশালী’ করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছিল ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি। সেই অর্থায়ন বন্ধ হয়েছে ট্রাম্পের নির্দেশে। তবে এই যে ২৯ মিলিয়ন ডলার ছিল, সেটা কার পকেটে গিয়েছিল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট শক্তিশালী করার নামে এমন এক সংস্থাকে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছিল, যার নাম আগে কেউ শোনেনি। সেখানে মাত্র দুজন কর্মী কাজ করেন।’ এই রাইট টু ফ্রিডম সংগঠনটিই ট্রাম্পের সেই সংগঠন বলে দাবি করা হচ্ছে। এই সংগঠনটি আবার মার্কিন মুলুকে রেজিস্টার্ড।
এদিকে হারুনের উদ্দেশে জন ড্যানিলোউইচ নিজের সোশ্যাল বার্তায় লেখেন, ‘আমি আশা করি কানাডা আপনার আশ্রয়ের আবেদন নাকচ করে দেয়।’ এর জবাবে হারুন লেখেন, ‘ইউনুসের ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ জুড়ে যতটা মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, স্বাধীনতার পর থেকে এত বছরেও তেমনটা হয়নি। তবে আপনাদের জন্যে বাংলাদেশ শুধু মাত্র অর্থ উপার্জনের এক উপয়।’