গত বছরের ৯ জুন রিয়াসি জেলায় তীর্থযাত্রীদের বাসে হামলা এবং ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি রাজৌরি জেলার ডাংরি গ্রামে সাতজনকে হত্যার মূল ছিল এই ফয়সাল নাদিম ওরফে আবু কাতাল। হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত এই জঙ্গি নেতা লস্করের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আবু কাতালকে ১৫ মার্চ পাক পঞ্জাবের দিনা এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয়। লস্কর-ই-তৈবা প্রধান হাফিজ সইদের ভাইপো ছিল আবু কাতাল। রিপোর্ট অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঝিলাম জেলার দিনা এলাকায় নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে যাওয়ার সময় অজ্ঞাত হামলাকারীদের গোলাগুলির মুখে পড়েন তারা।
লস্কর-ই-তৈবার চিফ অপারেশনাল কমান্ডার পদে ছিল আবু কাতাল। সে জম্মু ও কাশ্মীরে হামলা চালানোর দায়িত্বে ছিল। জম্মু অঞ্চলে, বিশেষ করে রিয়াসি ও রাজৌরি জেলায় সাধারণ মানুষকে নিশানা করে মারাত্মক সব হামলার ছক কষেছিল সে। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি সন্ত্রাসীরা ডাংরি গ্রামে হামলা চালায়, গ্রামবাসীদের উপর গুলি চালায় এবং পাঁচজন নিরীহ নাগরিককে হত্যা করে। তারা পালানোর সময়, হামলাকারীরা একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) রেখে যায়, যা পরের দিন সকালে দুই নাবালকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।
এরপর ২০২৪ সালের ৯ জুন, জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসি জেলায় তীর্থযাত্রী ভর্তি একটি বাস সন্ত্রাসীদের কবলে পড়েছিল। জঙ্গি হামলার মুখে সেই বাসটি খাদে পড়ে গেলে ৯ জন নিহত এবং ৪১ জন আহত হয়েছিল। লস্কর হামলার মুখে শিবখোড়ি গুহা মন্দিরের দিকে যাওয়ার সময়ই বাসটি রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে গিয়েছিল। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) আবু কাতাল-সহ আরও চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল এই মামলায়। অভিযুক্তদের মধ্যে লস্কর-ই-তৈয়বার তিন পাকিস্তানভিত্তিক হ্যান্ডলারও রয়েছে। আবু কাতাল ছাড়াও বাকি দুই হ্যান্ডলারের নাম সইফুল্লা ও মহম্মদ কাসিম। এনআইএ-র দাবি, তিন হ্যান্ডলারের নির্দেশেই ভারতের মাটিতে হামলা চালানো হয়েছিল।
এই আবু কাতাল – আলি, হাবিবুল্লাহ, নোমান এবং মহম্মদ কাসিম সহ আরও বেশ কয়েকটি ছদ্মনামে পরিচিত ছিল। সীমান্তের ওপার থেকে লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গিদের নিয়োগ ও মোতায়েনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল কাতাল। তাঁর মূল টার্গেটে ছিল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নিরাপত্তারক্ষীরা।