ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস লিখল চার হাজারেরও কম মানুষের দেশ

Spread the love

সেই দেশের জনসংখ্যা চার হাজারও নয়। তবে সেখানেও ক্রিকেট মন ছুঁয়েছে। সেই দেশ এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও খেলছে। ক্রিকেটের ইতিহাসে ইতিমধ্যে নাম লিখিয়ে ফেলেছে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ। ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় পা রেখেছে গত সপ্তাহেই। ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ প্রথম বারের মতো খেলেছে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। কোস্টারিকার বিরুদ্ধে ছয় ম্যাচের সিরিজে জয়ও পেয়েছে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ।

যদিও কোস্টারিকা এবং ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে নামেই বোধহয় ক্রিকেট খেলা চলছিল। লড়াই আদতেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ছিল না। খেলোয়াড়দের শরীর ঠিক মতো নড়ছিল না। কাছে গেলে বুড়িয়ে যাওয়া চামড়া স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। শরীরের গঠন দেখলে, আর যাই হোক, ক্রিকেটার মনে হবে না।

একটা ম্যাচে তো দুই দল নেমেছিল ৩৫ বছরের বড় ১৮ জন খেলোয়াড় নিয়ে। এমন কী ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের দলে একটি ম্যাচে নয় জন ক্রিকেটারের বয়স ছিল চল্লিশের বেশি। নিঃসন্দেহে এটি বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বুড়ো দলের তকমা পাবে। ফকল্যান্ড যে ১৫ জনের স্কোয়াড নিয়ে কোস্টারিকায় গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ১১ জনের বয়স চল্লিশের বেশি। এমন কী পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের চার জনকে নিয়েও মাঠে নামার নজির রয়েছে ফকল্যান্ডের।

তাঁদের মধ্যে দু’জন আবার বয়সের প্রেক্ষিতে দু’টি বিশ্বরেকর্ডও করে ফেলেছেন। সবচেয়ে বেশি বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার রেকর্ড গড়েছেন ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের অ্যান্ড্রু ব্রাউনলি। ম্যাচের দিন তাঁর বয়স ছিল ৬২ বছর ১৪৭ দিন! সবচেয়ে বেশি বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করা ক্রিকেটারও এই ফকল্যান্ডেরই। অ্যালান ডসন এই রেকর্ডের মালিক হয়েছেন। ৫৬ বছর ৩৪২ দিন বয়সে তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে লিখেছেন ইতিহাস।

কোস্টারিকার বিপক্ষে সিরিজে আর একজন অধিনায়ক ছিলেন সিসিল আলেকজান্ডার। যাঁকে আবার কিছু দিন আগে ইউটিউবে এক সাক্ষাৎকারে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব হিসেবে। একটা মাঠের বন্দোবস্ত হয়েছে, একটি পিচ রয়েছে সেখানে- তিনি শোনাচ্ছিলেন সেই গল্প। ২০২৫ সালে এসে ৪৪ বছর বয়সে তিনিও ব্যাট-বল হাতে নেমে গিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ পেতে।

আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা সর্বশেষ দেশ হচ্ছে ফকল্যান্ড। ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশও এটি। মালভিনাস নামেও পরিচিত এই দেশের মোট আয়তন ১২ হাজার ১৭৩ বর্গ কিলোমিটার। দক্ষিণ আমেরিকার যে দেশে পেঙ্গুইনের সংখ্যাই দশ লাখের বেশি, সেখানে ক্রিকেট পৌঁছে গেল কী ভাবে, সেটাই বড় বিস্ময়।

২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) সহযোগী সদস্য দেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে সহযোগী দেশের মধ্যে সব টি-টোয়েন্টি ম্যাচকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করেছে আইসিসি। তবে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে ফকল্যান্ডকে। ২০২৫ সালের মার্চে এসে তাদের সেই অপেক্ষার অবসান হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *