বিদেশ সফরে পরিবারের উপস্থিতির নিয়মে আসবে বড় পরিবর্তন

Spread the love

BCCI Family Rule Change: বিদেশ সফরে খেলোয়াড়দের পরিবারের উপস্থিতির নিয়ম শিথিল করতে পারে বিসিসিআই। ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি দীর্ঘ সফরে পরিবারের গুরুত্ব সম্পর্কে মত প্রকাশের পর, বিসিসিআই তাদের বর্তমান নীতিতে কিছুটা শিথিলতা আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

পরিবার নিয়ে BCCI-এর নিয়ম কী ছিল?

২০২৪-২৫ বর্ডর-গাভাসকর ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১-৩ ব্যবধানে হারের পর, বিসিসিআই একটি নিয়ম চালু করেছিল, যেখানে ৪৫ দিনের বেশি সময় ধরে চলা সফরে খেলোয়াড়দের পরিবার মাত্র ১৪ দিন থাকতে পারবে। স্বল্পমেয়াদি সফরের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা এক সপ্তাহ নির্ধারণ করা হয়েছিল।

বোর্ডের নিয়ম নিয়ে কোহলি কী বলেছিলেন?

সম্প্রতি, বিরাট কোহলি বেঙ্গালুরুতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) ইনোভেশনাল ল্যাব ইন্ডিয়ান স্পোর্টস সামিটে ইসা গুহর সঙ্গে কথোপকথনের সময় এই নীতির বিষয়ে নিজের মতামত জানান। তিনি বলেন, কঠিন পরিস্থিতিতে পরিবারের উপস্থিতি একজন খেলোয়াড়ের মানসিক সুস্থতা এবং পারফরম্যান্সের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

রিপোর্টে কী বলা হচ্ছে-

এখন, সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বিসিসিআই এই নিয়মে পরিবর্তন আনতে পারে। যেখানে খেলোয়াড়রা পরিবারের জন্য অতিরিক্ত সময় থাকার অনুমতি চেয়ে বোর্ডের কাছে আবেদন করতে পারবেন।

বিসিসিআই পরিবারের উপস্থিতি নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে

একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্রিকেটারদের পরিবারের উপস্থিতি নীতি নিয়ে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড নতুনভাবে ভাবছে। যদি খেলোয়াড়রা দীর্ঘ সময়ের জন্য তাদের পরিবারকে সফরে রাখতে চান, তাহলে তারা বিসিসিআইয়ের কাছে অনুমতি চাইতে পারবেন এবং বোর্ড যথাসাধ্য সাহায্য করার চেষ্টা করবে।

সিদ্ধান্ত বদলে কোহলির বড় ভূমিকা-

একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিসিআই পরিবার থাকার নীতিতে কিছুটা শিথিলতা আনার কথা বিবেচনা করছে। বিসিসিআই সূত্র জানিয়েছে, খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফরা নির্দিষ্ট অনুমোদন পেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি সময় ধরে পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারবেন। এই সিদ্ধান্তটি এসেছে বিরাট কোহলির মন্তব্যের পরেই। তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, কঠিন ও হাই-ইনটেনসিটি ম্যাচের পর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো খেলোয়াড়দের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে।

বিসিসিআই সূত্র কী বলেছেন?

এক বিসিসিআই সূত্র জানিয়েছে, ‘খেলোয়াড়রা যদি তাদের পরিবারের জন্য অতিরিক্ত সময় চায়, তাহলে তারা আবেদন করতে পারবে। বিসিসিআই নিজস্ব বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবে।’

কবে, কী কারণে এবং কী কী নীতি চলু করেছিল BCCCI?

২০২৫ সালের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাজে পারফরম্যান্সের পর, বিসিসিআই সিনিয়র পুরুষ দলের জন্য ১০-দফা শৃঙ্খলাবিধি চালু করেছিল। যেখানে বিদেশ সফরে পরিবারের উপস্থিতির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কোচ গৌতম গম্ভীর এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মার সঙ্গে এক পর্যালোচনা বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

বর্তমান পারিবারিক নীতির মূল বিষয়সমূহ:

১) ৪৫ দিনের বেশি সময় ধরে চলা সফরে খেলোয়াড়রা তাদের স্ত্রী ও ১৮ বছরের কম বয়সি সন্তানদের একবার মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য সঙ্গে রাখতে পারবেন।

২) বিসিসিআই কেবল খেলোয়াড়দের সঙ্গে শেয়ার্ড অ্যাকোমোডেশনের খরচ বহন করবে।

৩) অন্যান্য সকল খরচ খেলোয়াড়দের নিজেদের বহন করতে হবে।

৪) সফরের সময় ঠিক কখন পরিবার আসতে পারবে, তা কোচ, অধিনায়ক এবং জিএম অপারেশনের অনুমোদন সাপেক্ষে নির্ধারিত হবে।

৫) এই নীতির বাইরে কোনও ছাড় পেতে হলে কোচ, অধিনায়ক এবং জিএম অপারেশনের বিশেষ অনুমোদন নিতে হবে।

বিরাট কোহলির উদ্বেগ কী ছিল?

সম্প্রতি আইপিএল ২০২৫-এর প্রচারমূলক ইভেন্টে, বিরাট কোহলি পারিবারিক নীতির সীমাবদ্ধতার বিরুদ্ধে কথা বলেন। বিরাট কোহলি বলেন, ‘আপনি যদি কোনও খেলোয়াড়কে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি কি সবসময় তোমার পরিবারকে পাশে পেতে চাও?’ সবাই বলবে, ‘হ্যাঁ।’ আমি খেলাধুলার বাইরে একটি স্বাভাবিক জীবন চাই। খেলা একটি দায়িত্ব, সেটি শেষ করার পর আমি আমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চাই। আমি চাই না যে একা ঘরে বসে থাকি এবং মন খারাপ করি।’

কপিল দেবের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক কপিল দেবও বিরাট কোহলির বক্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এটি ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিষয়। আমার মতে, হ্যাঁ, পরিবার থাকা দরকার, তবে দলকেও সব সময় একসঙ্গে থাকতে হবে। আমাদের সময়ে, আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতাম—সফরের প্রথমার্ধে শুধু খেলা, পরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো। এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রক্রিয়া হওয়া উচিত।’

২০২৫ সালের মার্চে দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর, ভারতীয় দলের খেলোয়াড়রা পরিবারের সঙ্গে বিজয় উদযাপন করেছিলেন। বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা তাদের পরিবারের সঙ্গে আনন্দঘন মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন। বিসিসিআইয়ের পারিবারিক নীতির সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে এখন ক্রিকেট মহলে আলোচনা চলছে। বোর্ড যদি নতুন নিয়ম কার্যকর করে, তাহলে দীর্ঘ সফরে থাকা খেলোয়াড়রা তাদের পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *