আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল বলে ওঠে অভিযোগ। সেই ঘটনায় আন্দোলনে নামেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তখন তাঁদের উপর হামলা করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আর ওই পরিকল্পনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান দাশগুপ্তের। একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়ে যায়। যা সামনে নিয়ে আসে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তার জেরে গ্রেফতার হতে হয়েছিল কলতানকে। আইনজীবী তথা সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করে জামিন পাইয়ে দেন। কিন্তু তারপরও এই ঘটনায় যবনিকা পতন ঘটেনি। এবার কলতান দাশগুপ্তের ভয়েস স্যাম্পেল সংগ্রহ করতে পুলিশ। তাই পদক্ষেপ করতে চায় রাজ্য সরকারও।
আজ, মঙ্গলবার এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। এই মামলার আগামী সপ্তাহেই শুনানি হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা যখন সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনের বাইরে অবস্থান আন্দোলনে করছিলেন তখন একটি ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ সামনে আসে। সেখানে যে কথোপকথন হয় এবং স্বর শোনা যায় সেটি কলতান দাশগুপ্তের বলে অভিযোগ ওঠে। আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর হামলা করার পরিকল্পনা শোনা যায়। যদিও সেই ভয়েস স্যাম্পেল বা অডিয়ো ক্লিপ যাচাই করে দেখেনি ইনিউজবাংলা ।
এই অডিয়ো ক্লিপ নিয়ে তদন্ত করতে নেমে পুলিশ সঞ্জীব দাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করেই কলতান দাশগুপ্তের নাম সামনে আসে। সেই সঙ্গে গোটা পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায়। দু’জনের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখার পর জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উপর আক্রমণ, হামলা নামিয়ে আনলে রাজ্য সরকারেরই বদনাম হবে। ছড়িয়ে পড়বে চিকিৎসকদের উপর তৃণমূল কংগ্রেস হামলা করেছে। তাতে রাজ্য–রাজনীতির মোড় ঘুরবে। তাঁদের মোবাইল ফোন দুটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। কিন্তু ওই দু’জন তা আনলক করেনি বলে তদন্ত করা যায়নি।
এবার সেইসব কিছু তদন্ত করতে চায় পুলিশ এবং রাজ্য সরকার। কলতানের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য কলকাতা হাইকোর্টে দাবি করেছিলেন, ষড়যন্ত্র করা হয়েছে তাঁর মক্কেল কলতানের বিরুদ্ধে। কন্ঠস্বর পরীক্ষা করা হোক। কণ্ঠস্বর পরীক্ষা না করে সে সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে কেমন করে গ্রেফতার করা হল? তাঁর মক্কেলকে পুলিশ অন্য মামলায় জড়িয়ে দিতে পারে। এমন আশঙ্কার কথাও আদালতে শুনিয়ে ছিলেন বিকাশ ভট্টাচার্য। তাই কলকাতা হাইকোর্ট জামিন দেয় কলতান দাশগুপ্তকে। এবার সেসব নিয়ে মাঠে নামতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য।