New history in Bangladesh cricket: নতুন ইতিহাস তৈরি হল বাংলাদেশ ক্রিকেটে। বাংলাদেশের স্কুল ক্রিকেটে মুস্তাকিম হাওলাদারের ঐতিহাসিক ৪০৪ রানের ইনিংস খেললেন। বাংলাদেশের স্বীকৃত ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগত ৪০০ রানের কীর্তি গড়লেন মুস্তাকিম হাওলাদার। ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের হয়ে সেন্ট গ্রেগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধে তিনি এই অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন। সেটাও ৫০ ওভারের ম্যাচে।
চার ছক্কার ঝড় উঠেছিল মাঠে-
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাউন্ডে মুস্তাকিম ওপেনিংয়ে নেমে মাত্র ১৭০ বলে অপরাজিত ৪০৪ রান করেন। তার ইনিংসে ছিল ৫০টি চার ও ২২টি ছক্কা। তার সঙ্গে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন চার নম্বরে নামা সাদ পারভেজ। তিনি ১২৪ বলে ২৫৬ রান করেন, নিজের ইনিংসে পারভেজ ৩২টি চার ও ১৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন।
তাদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ক্যামব্রিয়ান স্কুল তোলে ৭৭০ রান। জবাবে সেন্ট গ্রেগরি মাত্র ৩২ রানে অলআউট হয়ে যায়, ফলে ক্যামব্রিয়ান স্কুল পায় ৭৩৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায়।
আগের রেকর্ড কী আছে?
বাংলাদেশের স্বীকৃত ক্রিকেটে এর আগে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল তামিম ইকবালের। ২০২০ সালে তিনি ইস্ট জোনের হয়ে ৪২৬ বলে অপরাজিত ৩৩৪ রান করেছিলেন। তার আগে দেশের ক্রিকেটে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি করেন রাকিবুল হাসান, যিনি ২০০৬-০৭ মরশুমে সিলেটের হয়ে বরিশালের বিরুদ্ধে ৩১৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন।
রেকর্ড গড়ার পর মুস্তাকিমের প্রতিক্রিয়া
ঢাকা পোস্টকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় মুস্তাকিম বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। নিজের প্রতি অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। আমি ২০০ রান করার পর ভাবছিলাম রানটা কীভাবে আরও বাড়ানো যায়। নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল যে ইনিংসটা বড় করা সম্ভব। বাকিটা আল্লাহ পূরণ করেছেন।’
মুস্তাকিমের স্বপ্নের নায়ককে?
মুস্তাকিম ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও দক্ষ। তিনি লেগ স্পিন করেন এবং তার আদর্শ প্রাক্তন বাংলাদেশ অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। মুস্তাকিম বলেন, ‘আইডল বলতে শাকিব আল হাসান ভাই। আমি ওপেনিংয়ের পাশাপাশি লেগ স্পিন বল করি।’ তিনি আরও জানান, বিকেএসপিতে ট্রায়ালের সময় শাকিবের সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। মুস্তাকিম বলেন, ‘শাকিব ভাই মাঠে অনেক পরিশ্রম করেন, যা আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমি সবসময় সেটাই অনুসরণ করার চেষ্টা করি।’
মুস্তাকিমের স্বপ্ন কী?
মুস্তাকিমের স্বপ্ন জাতীয় দলের হয়ে খেলা। তবে আপাতত তার লক্ষ্য অনূর্ধ্ব-১৯ দলে জায়গা করে নেওয়া। মুস্তাকিম বলেন, ‘ভবিষ্যতে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে খেলার ইচ্ছা আছে।’ মুস্তাকিম তার সাফল্যের পিছনে বাবা-মায়ের অবদানকেও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেছেন। মুস্তাকিম বলেন, ‘আমার বাবা-মায়ের সমর্থন ছিল সবচেয়ে বেশি। তারা সবসময় আমার পাশে থেকেছেন। লকডাউনের সময় আব্বুর সঙ্গে ইন্ডোর প্র্যাকটিস করতাম। এছাড়া ঢাকা রাইডার্সের হয়ে নিয়মিত অনুশীলন করি।’ এই অসাধারণ ইনিংসের মাধ্যমে মুস্তাকিম হাওলাদার বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন এক ইতিহাস গড়লেন এবং ভবিষ্যতে তার আরও বড় সাফল্যের আশা করা যায়।