গ্রেফতার করার পাঁচদিন পর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বারাসত আদালতে পেশ করেছিল মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ বলে অভিযোগ। আর সোমবার সেই মামলার শুনানি চলল রাত ৩টে পর্যন্ত। নজিরবিহীন এই শুনানি শেষে জামিনও পেলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। একটি চেক বাউন্সের মামলাকে ঘিরে এমন বেনজির ঘটনা ঘটল। তবে এই বিলম্বিত আদালতে পেশ নিয়ে পুলিশ জানাল, ধৃত অসুস্থ হয়ে পড়েছিল বলেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে এই ঘটনাকে নিয়ে অভিযোগ উঠেছে যে, অসুস্থতা নিয়ে কোনও তথ্যই আদালতে জমা দেয়নি পুলিশ। ধৃতকে সকালের দিকে নয় আদালতে তোলা হয় বিকেলে। আর তখন থেকে টানা চলল শুনানি। এখানেই শেষ নয়, রাত ৩টের সময় রায় ঘোষণা করলেন বিচারক।
শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে এটাই ঘটেছে। তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। আদালত সূত্রে খবর, চেক বাউন্সের অভিযোগের গত ১২ মার্চ জ্যোতিপ্রকাশ দাসকে গ্রেফতার করে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। নিয়ম হচ্ছে, গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ধৃতকে আদালতে পেশ করতে হয়। কিন্তু এখানে ধৃতকে ১৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টায় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশ করে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। পরে সেখান থেকে এই মামলাটি স্থানান্তর করা হয় বারাসত আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে। রাত পৌনে ৯টা নাগাদ ওই মামলার শুনানি শুরু হয়ে চলে রাত ৩টে পর্যন্ত।
এদিকে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ আদালতে দাঁড়িয়ে জানায়, ধৃত ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে বারাসত সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। তাই পাঁচদিন পর পেশ করা হয়েছে ধৃতকে। অথচ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হলে তার যে নথি থাকে সে সব আদালতে জমা পড়েনি বলে অভিযোগ। অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল জ্যোতিপ্রকাশের অসুস্থতা এবং হাসপাতালে চিকিৎসা করানো নিয়ে কোনও তথ্যই পুলিশ দেয়নি আদালতে।
অন্যদিকে নজিরবিহীনভাবে মামলার শুনানি চলে রাত ৩টে পর্যন্ত। শেষে অভিযুক্তকে এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেন বিচারক। অভিযুক্তের আইনজীবী সুশোভন মিত্র বলেন, ‘আমার মক্কেলকে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ ১২ মার্চ গ্রেফতার করে। চেক বাউন্সের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু আদালতে তোলা হল ১৭ মার্চ। ধৃত অসুস্থ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কোনও তথ্যই মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ দেয়নি। শুনানির পর রাত ৩টেয় মক্কেলের জামিন হয়েছে। ১৫ বছরের ওকালতি জীবনে এমন কখনও হয়নি।’ মধ্যমগ্রাম থানার গাফিলতির কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।