সেন্ট জেভিয়ার্স ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাঁকে সাম্মানিক উপাধিতে (যথাক্রমে – ডিলিট ও ডক্টরেট) ভূষিত করেছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও তিনিও কখনও সেই উপাধি (ডক্টরেট বা ডক্টর) ব্যবহার করেননি বা করেন না! আজ (বৃহস্পতিবার – ২০ মার্চ, ২০২৫) নবান্নে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
কিন্তু, হঠাৎ করে কেন এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে হল তাঁকে? আসলে আগামী শনিবার লন্ডন সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাত দিনের ওই সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধী রাজনৈতিক শিবির – মূলত বাম ও বিজেপির তরফ থেকে নানা ধরনের দাবি, সমালোচনা, ব্যঙ্গ ও বিদ্রূপ করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে এদিনই তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh) দাবি করেন, মমতা লন্ডনে থাকাকালীন বাম, অতি বাম ও বিজেপি মনোভাবাপন্নদের একাংশ বিলেতে-ভূমে বিক্ষোভ প্রদর্শনের নামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে। মমতা নিজেও সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবং যাঁরা এমনটা করতে পারেন বলে দাবি করা হচ্ছে, তাঁদের ‘গণশত্রু’ বলে তীব্র কটাক্ষ করেছেন।
মমতার দাবি, এই ‘গণশত্রু’রা নোংরা খেলা খেলার চেষ্টা করছে। ইমেল ও হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে বাংলাকে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে, বিভিন্ন ড্রাফ্ট তৈরি করে পাঠানো হচ্ছে।
মমতা স্পষ্টই একটি চক্রান্তের আভাস দেন এবং তার জন্য সরাসরি নিজের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের কাঠগড়ায় তোলেন। তাঁর বক্তব্য, একজন অতি সাধারণ মানুষেরও শিক্ষার অধিকার রয়েছে। কিন্তু, সেই অধিকার নিয়েই নোংরা খেলা করা হচ্ছে।
মমতা বলেন, তাঁকে অসম্মান করতে গিয়ে তাঁর মাতৃভূমিকে অসম্মান করছে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের একাংশ। মমতার হুঁশিয়ারি, যাঁরা এমনটা করছেন, তাঁদের বাংলার মানুষও আগেও যোগ্য জবাব দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে।
এই প্রেক্ষিতেই মমতা মনে করিয়ে দেন যে তাঁকে অপমান করা হলেও সাম্মানিক ডিগ্রি ও উপাধি তিনিও পেয়েছেন। কিন্তু, তিনি কখনও সেই উপাধি নিজের নামের আগে ব্যবহার করে তার প্রচার করেননি। কিন্তু, বিরোধীরা বিরোধিতার করতে গিয়ে তাঁকে অসম্মান করছেন, বাংলার অপমান করছেন।
মমতা আরও জানান, তাঁর ব্রিটেন সফরে সমস্যা সৃষ্টি করতে যেসমস্ত ও ইমেল ও হোয়াট্সঅ্যাপ বার্তা ছড়ানো হচ্ছে বিদেশে, সেগুলির নমুনা তাঁদের হাতেও এসেছে। এবং তাঁরাও চাইলে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ করতে পারেন। কিন্তু, তাঁরা এমনটা করতে চান না। কারণ, শিক্ষা নিয়ে এই ধরনের নোংরা খেলা কাম্য নয়।
সমালোচকদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, নিজেকে, নিজের জন্মস্থানকে, নিজের দেশকে সম্মান করুন। একইসঙ্গে মমতার চ্যালেঞ্জ, তাঁর বিরুদ্ধে যত বেশি কুৎসা হবে, পৃথিবীজুড়ে তাঁর তত বেশি প্রচার হবে। তাতে যে আখেরে তাঁরই লাভ হবে, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সেই বার্তাও দিয়েছেন মমতা।