শনিবার ছত্তিশগড়ের বস্তার অঞ্চলের সুকমা ও বিজাপুর জেলায় জোড়া এনকাউন্টারে ১১ জন মহিলা মাওবাদী সহ ১৮ জন মাওবাদীকে নিকেশ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছত্তিশগড় সফরের প্রাক্কালে এই এনকাউন্টার।
সুকমায় মাওবাদী কুহদামি জগদীশ নামে এক মাওবাদী নেতার মাথার দাম ছিল ২৫ লাখ টাকা। তিনি সহ ১৭ জন ক্যাডারকে নিকেশ করা হয়েছে।এই ঘটনায় চার জওয়ান আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
২০১৩ সালে ঝিরাম উপত্যকায় হামলা-সহ এক ডজনেরও বেশি প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় তাদের খোঁজ চলছিল।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী বিজাপুর জেলায় আরও একটি এনকাউন্টারের খবর পাওয়া গেছে যেখানে একজন নকশাল নিহত হয়েছে।
আহত চার নিরাপত্তারক্ষীর মধ্যে তিনজন রাজ্য পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি) এবং চতুর্থজন সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) সদস্য।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সুকমা এনকাউন্টারকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, যারা অস্ত্র বহন করে এবং হিংসার আশ্রয় নেয় তারা পরিবর্তন আনতে পারে না তবে শান্তি ও উন্নয়ন পারে পরিবর্তন আনতে পারে।
তিনি লিখেছেন, নকশালদের বিরুদ্ধে ফের অভিযান! আমাদের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি সুকমায় এক অভিযানে ১৬ জন নকশালকে নিকেশ করেছে এবং বিপুল পরিমাণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের আগে নকশালবাদ নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
দশ দিন আগে নিরাপত্তা বাহিনী বস্তার অঞ্চলের বিজাপুর ও কাঙ্কের জেলায় দুটি পৃথক এনকাউন্টারে ৩০ জন মাওবাদীকে গুলি করে নিকেশ করেছিল।
বস্তার রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ সুন্দররাজ পি জানিয়েছেন, সকাল ৮টা নাগাদ সুকমা জেলার কেরলাপাল থানা এলাকার জঙ্গলে গুলির লড়াই শুরু হয়।
আইজি জানিয়েছেন, কেরলাপাল থানা এলাকার গোগুন্ডা, নেনদুম ও উপমপল্লি গ্রামের জঙ্গলে মাওবাদীদের উপস্থিতির খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে শুরু হওয়া অভিযানে ডিআরজি এবং সিআরপিএফের ১৫৯ তম ব্যাটেলিয়নের কর্মীরা ছিলেন।
গুলি বিনিময় থামার পর সংঘর্ষস্থল থেকে ১১ জন মহিলা-সহ ১৭ জন নকশালের দেহ উদ্ধার হয়।
মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন ডিআরজি ও এক সিআরপিএফ জওয়ান সামান্য আহত হয়েছেন।
আহত জওয়ানদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের অবস্থা স্বাভাবিক বলে জানা গিয়েছে।
সুন্দররাজ জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি একে-৪৭ রাইফেল, সেলফ লোডিং রাইফেল (এসএলআর), ইনসাস রাইফেল, .৩০৩ রাইফেল, একটি রকেট লঞ্চার ও ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার (বিজিএল) এবং বিস্ফোরক সামগ্রী সহ প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত ক্যাডারদের মধ্যে এ পর্যন্ত সাতজনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং বাকিদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
মাওবাদীদের বিশেষ জোনাল কমিটির সদস্য তথা দরভা ডিভিশনের সম্পাদক কুহদামি জগদীশ ওরফে বুদ্ধরাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
২০১৩ সালে ঝিরাম উপত্যকায় জঙ্গি হামলা-সহ এক ডজনেরও বেশি প্রাণঘাতী নকশাল ঘটনায় জগদীশের খোঁজ চলছিল বলে খবর।
মৃত আরও ছ’জন ক্যাডারের মধ্যে মাওবাদীদের চারজন এরিয়া কমিটির সদস্য রয়েছেন।
ওই এলাকায় এখনও তল্লাশি অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিজাপুর জেলার নরসাপুর-টেকামেটলা গ্রামের কাছে একটি জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনী ও নকশালদের মধ্যে গুলির লড়াই শুরু হয়।
ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি) এবং সিআরপিএফের এলিট ইউনিট কোবরা-র ২১০তম ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন।
সংঘর্ষস্থল থেকে এক নকশালপন্থীর দেহ ও একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এলাকায় তল্লাশি অভিযান চলছে। খবর পিটিআই সূত্রে।