হায়দরাবাদের অনামী জেসন আনসারির মরিয়া লড়াই

Spread the love

মিচেল স্টার্কের দাপটেই মরশুমের দ্বিতীয় জয় ছিনিয়ে নিল দিল্লি ক্যাপিটালস। রবিবার (৩০ মার্চ) ভাইজ্যাগে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঘরের মাঠে তাদেরকেই খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিলেন অক্ষর প্যাটেলরা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা হারিয়েছিল লখনউ সুপার জায়ান্টসকে। এদিকে রেকর্ড রান করে বড় জয় দিয়ে ২০২৫ আইপিএল অভিযান শুরু করেছিল হায়দরাবাদ। কিন্তু তার পরেই ছন্দপতন। পরপর দুই ম্যাচ হেরে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছেন প্যাট কামিন্সরা।

স্টার্কের আগুনে পুড়ে ছাই হায়দরাবাদ

এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। লক্ষ্য ছিল, রানের পাহাড় গড়ে ঘরের মাঠে দিল্লিকে চাপে ফেলা। কিন্তু মিচেল স্টার্ক হায়দরাবাদের সেই লক্ষ্য সফল হতে দেননি। পাওয়ারপ্লে-তেই ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। এর পর ডেথ ওভারে নেন আরও ২ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ান পেসার এদিন ৩.৪ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন। যার নিটফল, প্রথমে ব্যাট করে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৮.৪ ওভারে ১৬৩ রানে অল আউট হয়ে যায়। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ১৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তুলে ফেলে দিল্লি ক্যাপিটালস। ২৪ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে সহজ জয় ছিনিয়ে নিয়ে অক্ষরের দিল্লি।

পাওয়া প্লে-তেই ৪ উইকেট হারায় এসআরএইচ

এদিন স্টার্ক এতটাই বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন যে, ৪.১ ওভারে ৩৭ রানের মধ্যে ৪ উইকেট পড়ে যায় হায়দরাবাদের। তার মধ্যে একটি রানআউট ছাড়া বাকি তিনটি উইকেটই স্টার্ক নিয়েছেন। দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল বাঁ-হাতি তারকা ফাস্ট বোলারকে দিয়েই পাওয়ার প্লে-তে তিন ওভার বল করান। আর এই তিন ওভারেই স্টার্ক ফেরান ইশান কিষাণ (২), নীতিশ কুমার রেড্ডি (০) এবং ট্র্যাভিস হেডকে (২২)। আর এতেই বড় চাপে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। ১৯তম ওভারে ফের বল করতে এসে আরও ২ উইকেট তুলে নেন স্টার্ক। উইয়ান মাল্ডার (৯) এবং হর্ষাল প্যাটেলকে (৫) ফিরিয়ে হায়দরাবাদের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন অজি তারকা।

ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স অনিকেতের

হায়দরাবাদের টপ অর্ডার এদিন চূড়ান্ত ফ্লপ হয়। তবে দলের হয়ে একমাত্র ভরসা জোগান অনিকেত বর্মা। পাঁচে ব্যাট করতে নেমে তিনি দলের হাল ধরেন। শুরুতে পাশে পান হেনরিখ ক্লাসেনকে। পঞ্চম উইকেটে অনিকেত এবং ক্লাসেন মিলে ৪০ বলে ৭৭ রান যোগ করেন। কিন্তু ২টি করে চার এবং ছয়ের হাত ধরে ১৯ বলে ৩২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ক্লাসেন। তবে একা লড়াই চালাচ্ছিলেন অনিকেত। কিন্তু কাউকে তিনি পাশে পাননি। ১৬তম ওভারের পঞ্চম বলে অনিকেত বর্মা আউট হলে, হায়দরাবাদের ইনিংসে ধস নামে। ৪১ বলে ৭৪ রানের দুরন্ত একটি ইনিংস খেলেন অনিকেত। তাঁর এই ইনিংস সাজানো ছিল ছ’টি ছক্কা এবং পাঁচটি চারে। অনিকেতের এই ইনিংসের সৌজন্যেই হায়দরাবাদ তাও ১৬৩ রানে পৌঁছতে পারে। বাকিরা তো কেউ দুই অঙ্কের ঘরেই পৌঁছতে পারেননি।

দিল্লির হয়ে মিচেল স্টার্কের বিধ্বংসী ৫ উইকেট ছাড়া, ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন কুলদীপ যাদব। একটি উইকেট পেয়েছেন মোহিত শর্মা।

ফ্যাফের হাফসেঞ্চুরি, সহজ জয় দিল্লির

১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দিল্লি ক্যাপিটালস শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিল। ২ ওপেনার জ্যাক ফ্রেজ ম্যাকগার্ক এবং ফ্যাফ ডু’প্লেসি মিলে ৯ ওভারে ৮১ রান করে ফেলেন। তবে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করার পরেই আউট হয়ে যান ফ্যাফ। তিনি ২৭ বলে ৫০ রান করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ৩টি করে চার এবং ছক্কা। ফ্যাফের পিছন পিছনই সাজঘরে ফেরেন ম্যাকগার্ক। ২টি ছক্কা এবং চারটি বাউন্ডারির হাত ধরে ম্যাকগার্ক ৩২ বলে ৩৮ করে আউট হন। কেএল রাহুল এদিন দিল্লির হয়ে তাঁর প্রথম ম্যাচ খেলেন। কিন্তু তিনি নিরাশ করেছেন। ৫ বলে ১৫ করেই আউট হয়ে যান রাহুল। মারেন ১টি ছয়, ২টি চার। তবে তিনে নেমে অভিষেক পোড়েল দায়িত্ব নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ২টি করে চার, ছয়ের হাত ধরে অভিষেক ১৮ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করেন। তিনিই ১৬তম ওভারের শেষ বলে ছক্কা মেরে দিল্লির জয় নিশ্চিত করেন। অভিষেকের সঙ্গে অপরাজিত থাকেন ত্রিস্তান স্টাবস। তিনি ১৪ বলে ২১ করেন। হাঁকান তিনটি চার।

একা লড়লেন জেসন আনসারি

হায়দরাবাদ বোলারদের মধ্যে একা লড়লেন জেসন আনসারি। তিনি দিল্লির ৩ উইকেটই তুলে নেন। ৪ ওভার বল করে ৪২ রান দিয়েছেন হায়দরাবাদের এই অনামী স্পিনার। এদিনই এসআরএইচের জার্সিতে তাঁর অভিষেক হয়েছিল। কিন্তু হায়দরাবাদের পুঁজি এতটাই কম ছিল যে, অভিষেক ম্যাচে তাঁর দুরন্ত লড়াই ব্যর্থ হয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *