মোথাবাড়ির গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumder)। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, মালদার মোথাবাড়ির ঘটনায় বাংলাদেশ যোগ থাকতে পারে! কারণ – তাঁর দাবি, ওখানে যারা অশান্তি ছড়িয়েছিল, তাদের অনেকেই এলাকার লোক নয়!
এছাড়াও, রবিবার (৩০ মার্চ, ২০২৫) মোথাবাড়ি ঢোকার চেষ্টা করেন সুকান্ত। কিন্তু, পুলিশ তাঁকে প্রায় ৭ কিলোমিটার আগেই আটকে দেয় বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে। সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি অনুসারে, পুলিশের সেই ব্যারিকেডের সমালোচনা করতে গিয়ে বাংলার অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার সঙ্গে তার তুলনা করেন সুকান্ত এবং পুলিশকে ‘জেহাদি তিতুমীর’ বলে সম্বোধন করেন!
এদিন টিভি নাইট বাংলা-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোথাবাড়ি সম্পর্কে সুকান্ত বলেন, ‘আমি মোথাবাড়িতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, যারা অশান্তি করেছে, তাদের মধ্যে অনেক অপরিচিত ব্যক্তি রয়েছে। ওরা কেউ স্থানীয় বাসিন্দা নয়। তাহলে কি তারা বাংলাদেশ থেকে এসে এখানে আশ্রয় নিয়েছে? ওদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে এসব করার জন্য?’
এই প্রসঙ্গেই ফের একবার বাংলা তথা ভারতের জনসংখ্য়া ও জনঘনত্বের চরিত্র বদলে দেওয়ার অভিযোগ করেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘ভারতে তো বহুদিন থেকে ডেমোগ্রাফির হাত ধরে বদল করার একটা চেষ্টা চলছে। লড়কে লিয়া পাকিস্তান, হাসকে লেঙ্গে হিন্দুস্তান – সেই সময় তো স্লোগান ছিল পাকিস্তানের! জনসংখ্যা বৃদ্ধি করব, হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যাবে, এমনিই হিন্দুস্তান দখল হয়ে যাবে। এখন যেহেতু জনসংখ্যা বৃদ্ধি করেও হচ্ছে না, তখন অনুপ্রবেশ হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এখানে লোক ঢোকানো হচ্ছে।’
অন্যদিকে, এদিন মোথাবাড়ি যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে রাস্তাতেই বসে পড়েন সুকান্ত মজুমদার ও তাঁর সঙ্গে থাকা বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। সংবাদ প্রতিদিন.ইন অনুসারে – পুলিশের এই বাধার মুখে পড়ে সুকান্ত বলেন, ‘আমি একা যেতে চাইলেও যেতে দেওয়া হয়নি। অথচ, এখানকার বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিনের জন্য সব রাস্তা খোলা। পুলিশ তো শাসকদলের হয়ে কাজ করে। এই যে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো হল, কী বলব আর? আমরা তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার কথা জানি। এখনকার পুলিশ জেহাদি তিতুমীর! তাই এভাবে বাঁশের ব্যারিকেড গড়েছে। তবে আমরা এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও জোরদার করব। আজই আমি ঘোষণা করব পরবর্তী আন্দোলনের কথা।’
প্রসঙ্গত, ইতিহাস বলছে – তিতুমীর হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। বর্তমান দুই চব্বিশ পরগনা, নদিয়া এবং ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে তা ‘স্বাধীন’ ভূখণ্ড হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। তিতুমীর বেশ কয়েকবার শক্তিশালী ব্রিটিশের বিরুদ্ধে অসম লড়াই করেও জিতেছিলেন। কিন্তু, শেষমেশ তিনি ব্রিটিশের হাতে পরাজিত হন। ব্রিটিশকে রুখতে তৈরি করা তাঁর ‘বাঁশের কেল্লা’ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। তিতুমীর ও তাঁর সহযোদ্ধারা শহিদ হন।