মুর্শিদাবাদের নওদায় দুই সম্প্রদায়ের হিংসা নিয়ে গতরাত থেকে সরব হন বিজেপি নেতারা। শুভেন্দু অধিকারী থেকে সুকান্ত মজুমদাররা অভিযোগের আঙুল তোলেন প্রশাসনের দিকে। এই আবহে নওদার হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গে আজ মুখ খুলেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে পুলিশের তরফ থেকে এই নিয়ে লেখা হয়, ‘গত রাতে, মুর্শিদাবাদ জেলার নওদাতে একটি গোলযোগ ছড়িয়ে পড়ে যেখানে কয়েকটি দোকানের সামান্য ক্ষতি হয় এবং তিনটি পানের খামারে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় দুটি সুনির্দিষ্ট মামলা শুরু হয়েছে এবং রাতভর অভিযানে এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।’
এরপর পুলিশ আরও লেখে, ‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ফের একবার স্পষ্ট করতে চায় যে, কেউ যদি শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টির জন্য গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। আমরা সকলকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি এবং সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’
এর আগে শুভেন্দু অধিকারী নওদা প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, ‘আমি বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য পেয়েছি যে গতকাল মালদা জেলার মোথাবাড়ির মতো, মুর্শিদাবাদ জেলার নওদা থানার অন্তর্গত ঝাউবোনা এবং ত্রিমোহনী বাজারে আবারও হিন্দু মালিকানাধীন দোকানগুলি বেছে বেছে ভাঙচুর করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ উপস্থিতিত থাকা সত্ত্বেও জিহাদিরা সহিংসতার ছড়িয়েছে। ইচ্ছামতো বোমা ছোড়া হচ্ছে। হিন্দু দোকানদারদের ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। এই সাথে সংযুক্ত করা ভিডিয়োটিতে জিহাদিদের দ্বারা আগুন লাগানোর পর একটি পান চাষের খামার আগুনে জ্বলতে দেখা যাচ্ছে।’
এদিকে এই নিয়ে সুকান্ত লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুষ্টির শাসনামলে হিন্দুদের ওপর আরও একটি ভয়াবহ হামলা! মোথাবাড়ি তাণ্ডবের পর জিহাদি জনতা ঝাউবোনা, নওদায় (মুর্শিদাবাদ) সন্ত্রাস চালিয়েছে। অন্ধকারের আড়ালে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে হিন্দু মালিকানাধীন পানের খামারে অগ্নিসংযোগ করেছে। ঝাউবোনা ও ত্রিমোহিনী বাজারে দোকান লুট করে এবং নিরীহ হিন্দুদের উপর সহিংস হামলা চালায়। তবু, ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতার পুলিশ নীরব দর্শক হয়েই রয়ে গেছে। এর থেকে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে তৃণমূলের বাংলায় হিন্দুরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক! প্রতি রাম নবমীতে, একই প্যাটার্ন আবির্ভূত হয় – হিন্দুদের নিশানা করা হয়, সন্ত্রাস করা হয়। এটি কোনও দুর্ঘটনা নয়, বরং ভয়-ভীতি প্রদর্শনের একটি সুপরিকল্পিত নকশা। মমতার লজ্জাজনক তুষ্টির রাজনীতি বাংলার হিন্দুদের জীবন বিপন্ন করেছে, কিন্তু আমরা ভয় পাই না! এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে সমগ্র হিন্দু সম্প্রদায় ঐক্যবদ্ধ। তৃণমূলের পুলিশি বর্বরতা বা জিহাদি সন্ত্রাসের কোনো পরিমান প্রতিরোধ থামাতে পারবে না! চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে ওই অঞ্চলের নিরীহ হিন্দুরা ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। আমি অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় রাজ্যপালের কাছে অবিলম্বে সাহায্যের জন্য আবেদন করছি।’