এসএসসি-র তৈরি করা ২০১৬ সালের প্যানেল প্রায় সম্পূর্ণ বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে প্রায় ২৬ হাজার কর্মরত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে নিজেদের চাকরি হারাতে হয়েছে। কিন্তু, একইসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ sদুর্নীতির ফলে যাঁদের চাকরি গেল, তাঁদের মধ্য়ে অধিকাংশই ফের তাঁদের চাকরি ফেরত পাবেন। কিন্তু, এর জন্য আরও একবার তাঁদের নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। এর জন্য আগামী তিনমাসের মধ্যে এসএসসি কর্তৃপক্ষকে শুধুমাত্র এই চাকরিহারাদের জন্য পুনরায় গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে হবে। আর, এই প্রক্রিয়া নিয়েই কিছু প্রশ্নের জবাব পেতে ফের একবার আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে এসএসসি কর্তৃপক্ষ। তবে, এখনই সেটা নিশ্চিত নয়।
আগেই সংবাদমাধ্যমের হাতে তথ্য এসেছিল যে – সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, ঠিক কারা এইভাবে পুনরায় নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের পরীক্ষায় বসতে পারবেন, সেটা এসএসসি কর্তৃপক্ষের কাছে পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল, ২০২৫) এসএসসি-র পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান নিজে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তাতে তিনি নিজেও জানান, পুনরায় কাদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে, তা নিয়ে কিছু ধন্দ রয়েছে। এই বিষয়টি স্পষ্ট করতে এই সপ্তাহান্তেই তাঁরা আইনজীবীদের পরামর্শ নেবেন। তাতে যদি পুরোটা স্পষ্ট হয়ে যায়, তাহলে ভালো। অন্যথায় তাঁরা ফের একবার আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। তবে, তাঁরা আদালতে যাবেনই, এমন কোনও নিশ্চয়তা দেননি এসএসসি-র চেয়ারম্য়ান।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল, ২০২৫) শীর্ষ আদালত যে রায় ঘোষণা করেছে, সেই রায়ের প্রতিলিপি হাতে নিয়েই পরবর্তীতে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তাঁকে রায়ের ‘কনক্লুশন’ বা সমাধান পর্বের ৪৯ এবং ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদ উল্লেখ করতে দেখা গিয়েছিল।
সেই অনুসারে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট চাকরিহারাদের পুনরায় যোগ্যতা নির্ধারণের পরীক্ষায় বসার অবকাশ দিয়েছে। মমতা বলেছিলেন, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেই আগামী তিনমাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সারা হবে। যদিও এই কাজ করবে এসএসসি এবং তারা স্বশাসিত একটি সংস্থা। সরকার তাদের কাজে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। তবে, সরকারের অবস্থান তাদের কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হবে।
এক্ষেত্রে আদালত রায়ের প্রতিলিপি থেকে মমতা উল্লেখ করেছিলেন, পুনরায় যোগ্যতা নির্ধারণের পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে চাকরিহারাদের বয়সের উর্ধ্বসীমা-সহ নানাবিধ ছাড় ও সুবিধা দেওয়া হবে।
সূত্রের দাবি, এই বিশেষ ছাড় ও সুবিধা দেওয়ার বিষয়টিই স্পষ্ট নয় এসএসসি-র কাছে। যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের মধ্য়ে ঠিক কারা পুনরায় যোগ্যতা নির্ধারণ পরীক্ষায় বসার ‘যোগ্য’ সেটা আগে স্পষ্ট করতে চায় এসএসসি কর্তৃপক্ষ। এর জন্য তাদের পক্ষ থেকে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। এবং প্রয়োজনে এই বিষয়টি স্পষ্ট করতে তারা ফের একবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা রুজু করতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত দাবি করা হচ্ছে।
একইসঙ্গে এও জানা যাচ্ছে যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে পুনরায় যোগ্যতা নির্ধারণের প্রক্রিয়া শেষ করতে চাইছে এসএসসি। এক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা থেকে শুরু করে ইন্টারভিও – সবক’টি পর্যায়ই রাখা হচ্ছে।