দুর্নীতির মামলায় ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থি রাজনীতিক মেরিন লি পেনের কারাদণ্ড নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার কৌশল বলে আখ্যা দিয়ে তার দ্রুত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিরোধী দল ন্যাশনাল র্যালির (আরএন) নেত্রী লি পেন ও আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংসদীয় সহযোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে এক মামলায় বিচার শেষে সোমবার (৩১ মার্চ) রায় ঘোষণা করেন ফরাসি এক আদালত।
এতে মেরিন লে পেন এবং আরও ৮ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যকে (এমইপি) দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়া তাদের চুরি করা জিনিসপত্র গ্রহণের জন্য আরও ১২ জন সহকারীকেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
রায়ে লি পেনকে সরকারি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। রায়ে তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তবে দুই বছর স্থগিত এবং বাকি দুই বছরকে ইলেকট্রনিক ব্রেসলেট পেরে কারাগারের বাইরে কাটাতে হবে।
এছাড়া তাকে ১ লাখ ইউরো জরিমানা করা হয়েছে। তবে তার আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জেল জরিমানা বা জরিমানা প্রযোজ্য হবে না। রায়ে বলা হয় যে, তাৎক্ষণিকভাবে এই রায় কার্যকর হবে এবং রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরেও প্রযোজ্য হবে।
২০২৭ সালে ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো প্রার্থী হতে চাইছিলেন কট্টরপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালির (আরএন) নেত্রী মেরিন লি পেন। আদালতের রায় তার জন্য একটা বড় ধরনের আঘাত বলে মনে করা হচ্ছে। এই রায়ের ফলে তিনি আর আদৌ রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন কি না সেই আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
রায় ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে লে পেনের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন। এরপর বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া একটি পোস্ট করেন তিনি।
সেখানে লি পেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে ‘উইচ হান্ট’ অভিহিত করে তিনি বলেন, এই ঘটনা ইউরোপে বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক বিরোধীদের বাকস্বাধীনতা খর্ব করার আরেকটি দৃষ্টান্ত।
এ ঘটনাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার কৌশল বলে আখ্যা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ইউরোপের বামপন্থি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন। ট্রাম্পের মন্তব্য ও লি পেনের সাজা ইউরোপে ডানপন্থি রাজনীতির ভবিষ্যৎ ও স্বাধীন মতপ্রকাশের সীমা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে বলে মত বিশ্লেষকদের।