পশ্চিমবঙ্গে ফের রামনবমীতে হিংসার অভিযোগ। কলকাতায় রামনবমীর মিছিলে পাথর ছোড়ার অভিযোগ করা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে। বিজেপির অভিযোগ, শোভাযাত্রা চলাকালীন গেরুয়া পতাকা লাগানো গাড়িতে হামলা চালানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির কিছু ভিডিয়োও শেয়ার করেছে বিজেপি। ঘটনাটি পার্কসার্কাসে ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে বিজেপির তরফ থেকে। এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে কলকাতা পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় এই নিয়ে পুলিশ লিখেছে, ‘পার্ক সার্কাসে ঘটেছে বলে যে ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করা হচ্ছে যে, কোনও মিছিল বা জমায়েতের জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি, এবং ওই এলাকায় এমন কোন কার্যকলাপ ঘটেনি। একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কেস রুজু করা হয়েছে। জনসাধারণকে অনুরোধ করা হচ্ছে দয়াকরে গুজবে কান দেবেন না।’
এদিকে হামলার শিকার হওয়া গাড়ির ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি তাতে জানান, কলকাতার পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট এলাকায় রামনবমীর মিছিল ফেরার সময় রামভক্তদের ওপর হামলা হয়। গেরুয়া পতাকা বহনের জন্য গাড়িতে পাথর ছোড়া হয়। এর জেরে সেই গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এদিকে ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলা হয়। এই বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, ‘পুলিশ কোথায় ছিল? তারা সেখানেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল এবং গোটা ঘটনা দেখছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে বাছাই করা এই পুলিশ তাঁর তোষণের রাজনীতির জেরে পুরোপুরি দুর্বল হয়ে পড়েছে।’
এই নিয়ে সুকান্ত নিজের পোস্টে হুঁশিয়ারির সুরে লেখেন, ‘পুলিশের এই কাপুরুষোচিত নিষ্ক্রিয়তা একটি জিনিস প্রমাণ করে: রামনবমীর সময় ঐক্যবদ্ধ বাঙালি হিন্দুদের গর্জন সিস্টেমকে নাড়িয়ে দিয়েছে। মমতার আদর করা ‘শান্তিবাহিনী’ শান্তিপূর্ণ নয়—তারা আতঙ্কিত। এটি কেবল শুরু। আমরা কোলকাতা থেকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি- আগামী বছর, পার্ক সার্কাসের মধ্য দিয়ে আরও বড় রামনবমী মিছিল হবে। আর সেই পুলিশ যারা আজ নীরব দাঁড়িয়ে আছে? তারা আমাদের ওপর ফুলের বর্ষণ করবে।’
এদিকে বঙ্গ বিজেপির অফিশিয়াল পেজ থেকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে পোস্ট করে লেখা হয়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে-পার্ক সার্কাসে-এক ধর্মীয় মিছিলে রাম নবমীর ভক্তদের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঠিক গত শুক্রবার, একই স্থানে, মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে শহরকে অচল করে দেয়। তারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করে দিয়েছিল- আবারও, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনও হস্তক্ষেপ করল না। আজ, হিন্দুদের আবারও টার্গেট করা হয়েছে – এবং আবারও, পুলিশ নীরবতার পথ বেছে নিয়েছে।’