পেট্রল ডিজেলে ২ টাকা করে এক্সাইস ডিউটি বাড়াচ্ছে সরকার। এর জেরে পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়বে কি না তা নিয়ে চর্চা চলছে।
সিএনবিসিটিভি ১৮ এর প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, পেট্রল ও ডিজেলে ২ টাকা করে এক্সাইস ডিউটি বাড়ছে। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে প্রতি লিটারে ২ টাকা করে এক্সাইস ডিউটি বাড়ছে পেট্রল ও ডিজেলে।
এদিকে এএনআইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, ডিজেল ও পেট্রোলের উপর লিটার প্রতি ২ টাকা করে উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বর্তমানে সরকার পেট্রোলে প্রতি লিটারে ১৯.৯০ টাকা আবগারি শুল্ক নেয়। মঙ্গলবার থেকে তা বেড়ে হচ্ছে লিটার প্রতি ২১.৯০ টাকা।
একইভাবে, ডিজেলের উপর বর্তমানে আবগারি শুল্ক প্রতি লিটারে ১৫.৮০ টাকা, মঙ্গলবার থেকে এটি বেড়ে হবে ১৭.৮০ টাকা।
দিল্লিতে পেট্রোলের খুচরা মূল্য প্রতি লিটারে ৯৪.৭৭ টাকা এবং ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৮৭.৬৭ টাকা।
এদিকে পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, পেট্রোল ও ডিজেলের উপর লিটার প্রতি ২ টাকা করে আবগারি শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার৷ তবে খুচরো দামে কোনও পরিবর্তন হবে না৷ কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমানোর জন্য যে দাম কমানো হয়েছিল, তার সঙ্গে এই বৃদ্ধি সমন্বয় করা হবে৷
পেট্রোলে লিটার প্রতি ১৩ টাকা এবং ডিজেলে লিটার প্রতি ১০ টাকা এক্সাইজ ডিউটি বাড়ানো হয়েছে।
২০২৫ সালের এপ্রিলের ৮ তারিখ থেকে এই বর্ধিত শুল্ক কার্যকর হবে।
যদিও করের কোনও পরিবর্তন সাধারণত গ্রাহকদের উপর চাপানো হয়, তবে পেট্রোল ও ডিজেলের খুচরো বিক্রয় মূল্যে কোনও পরিবর্তন হবে না কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম হ্রাসের কারণে আবগারি মূল্য হ্রাস করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে তেলের চাহিদা হ্রাস পেতে পারে এমন মন্দার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় আন্তর্জাতিক তেলের দাম ২০২১ সালের এপ্রিলের পর থেকে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে।
সোমবার ব্রেন্ট ফিউচারের দাম ব্যারেলপ্রতি ২.৪৩ ডলার বা ৩.৭ শতাংশ কমে ৬৩.১৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড ফিউচারের দাম ২.৪২ ডলার বা ৩.৯ শতাংশ কমে ৫৯.৫৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
ভারত তার তেলের চাহিদা মেটাতে ৮৫ শতাংশ আমদানির উপর নির্ভরশীল।
তেল মন্ত্রকের তরফে একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণন সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে আজ আবগারি শুল্কের হার বাড়ার পরে #Petrol ও #Diesel খুচরো মূল্য আর বাড়বে না।
মোদী সরকার তার ১১ বছরের শাসনকালে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমলেই উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়ে দিয়েছে।
২০১৪-র নভেম্বর থেকে ২০১৬-র জানুয়ারি পর্যন্ত ৯ বার পেট্রোল ও ডিজেলের উপর আবগারি শুল্ক বাড়িয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
সব মিলিয়ে এই ১৫ মাসে পেট্রোলের দাম প্রতি লিটারে ১১.৭৭ টাকা এবং ডিজেলের উপর ১৩.৪৭ টাকা বাড়ানো হয়েছিল, যার ফলে সরকারের আবগারি শুল্ক ২০১৪-১৫ সালে ৯৯,০০০ কোটি টাকা থেকে ২০১৬-১৭ সালে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ২,৪২,০০০ কোটি টাকা হয়েছে।
সরকার ২০১৭ সালের অক্টোবরে আবগারি শুল্ক ২ টাকা এবং এক বছর পরে ১.৫০ টাকা কমিয়েছিল। তবে এটি ২০১৯ সালের জুলাই মাসে প্রতি লিটারে আবগারি শুল্ক ২ টাকা বাড়িয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে ফের উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়ে প্রতি লিটারে ৩ টাকা করে বাড়ানো হয়।
২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মে মাসের মধ্যে পেট্রোল ও ডিজেলের উপর লিটারে আবগারি শুল্ক ১৩ এবং ১৬ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।
কিন্তু পরের বছরগুলিতে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় লিটার প্রতি ১৩ ও ১৬ টাকা করে আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি প্রত্যাহার করে নেয় তারা। এর ফলে দিল্লিতে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ১০৫.৪১ টাকা এবং ডিজেলের সর্বোচ্চ দাম ৯৬.৬৭ টাকা থেকে কমেছে।
গত বছর লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণার ঠিক আগে সরকার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ২ টাকা করে কমিয়েছিল।
দিল্লিতে বর্তমানে পেট্রোলের দাম লির প্রতি ৯৪.৭৭ টাকা এবং ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৮৭.৬৭ টাকা।