কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ এইসব গাড়ি থেকে বাতাসে দূষণ ছড়াচ্ছে। তারপর কেটে গিয়েছে বেশ কিছু সময়। এবার বাণিজ্যিক গাড়ি ব্যবহার করার সময়সীমা বৃদ্ধির কথা ভাবতে শুরু করেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। তবে এক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। এই ভাবনার পিছনে কারণ হল, একাধিক বাসমালিক সংগঠনগুলি অনেকদিন ধরে সময়সীমা বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছিল। এই নিয়ে এখনও মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। বাসমালিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, কোভিড ১৯–এর জেরে বহু বেসরকারি বাস কার্যত বন্ধ ছিল। তাই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কম চলেছে ওই বাসগুলি।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, এক্ষেত্রে একটা পথ বের করা হয়েছে। যে বাসগুলি যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম এবং পরিবেশ দূষণ করে না সেগুলির মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। কিন্তু যেগুলি তা করে না সেগুলি বাদ দিতেই হবে। মেয়াদ বৃদ্ধির ভাবনা থাকলেও সংশ্লিষ্ট বাসগুলিকে পরিবহণ দফতর থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে। ওই ছাড়পত্র পেলে তখন বাসগুলি রাস্তায় নামতে পারবে। এখানেই শেষ নয়, প্রত্যেক ৬ মাস অন্তর ফিটনেস সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হবে। এই কয়েকটি শর্ত পূরণ হলেই অতিরিক্ত দু’বছর ওই বাসগুসি রাস্তায় নামার অনুমতি মিলতে পারে।
কিন্তু এখনও তো কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে। এই মামলা চলাকালীন কি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়? উঠছে প্রশ্ন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কলকাতা মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) এলাকার মধ্যে ১৫ বছরের বেশি পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। সুতরাং যে বাসগুলির মেয়াদ বাড়বে, সেগুলি কোনওভাবেই কলকাতার রাজপথে নামানো যাবে না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবহণ দফতরের এক অফিসার বলেন, ‘১৫ বছরের সময়সীমা অতিক্রম করে যাওয়া বাসগুলিকে সর্বোচ্চ দু’বছর অতিরিক্ত সময় বাড়ানো যেতে পারে। তবে বাসগুলিকে ১৭ বছর পর্যন্ত চালানোর অনুমতি দেওয়া হতে পারে।’
কলকাতার রাজপথে যাতে নামানো যায় তার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নেওয়া হবে। কিন্তু সেই অনুমতি কি মিলবে? প্রশ্ন উঠবে, গোটা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে পরিবহণ দফতরের অন্দরে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কেও বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী–সহ অফিসারদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই বিষয়ে সিটি সাবারবান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় পূর্ত জাতীয় সড়ক এবং পরিবহণ মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও বয়সসীমা নির্ধারণ করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট বাস যদি সমস্ত শর্ত পূরণ করে থাকে তাহলে কেন অতিরিক্ত সময় পাবে না? যাবতীয় শর্ত পূরণকারী বেসরকারি যানবাহনগুলির সময় ১৭ বছর থেকে বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।