চিনের সফরে গিয়ে ভারতের উত্তরপূর্বের ৭ রাজ্য নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ভারতের ৭ রাজ্য ‘স্থল পরিবেষ্টিত’, তাদের সাগরে যাওয়ার পথ নেই তাদের, ফলে সেই এলাকায় সাগরে বাংলাদেশেরই দাপট রয়েছে ! ইউনুসের এই বক্তব্যের পরই ভারত, বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করে দিয়েছে। অর্থাৎ ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ যে পণ্য রপ্তানি করত, তার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। সেই ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের ২৪ ঘণ্টার মাথাতে বাংলাদেশের ৪ পণ্যবাহী ট্রাক সীমান্ত থেকে আবার বাংলাদেশেই ফেরত পাঠিয়ে দিল ভারত। এমনই দাবি মিডিয়া রিপোর্টের।
বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট ভারত বাতিল করেছে বুধবারই। এরপর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে ৪ পণ্যবাহী ট্রাক ভারতের দিকে আসছিল সীমান্ত পার করে। জানা গিয়েছে, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের গেট থেকেই তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেয় ভারত। একটি মিডিয়া রিপোর্টের দাবি, ওই ট্রাক বোঝাই জিনিস যাচ্ছিল স্পেনে। তবে সেই ৪ টি ট্রাক ভারত পাঠিয়ে দিল ফের বাংলাদেশে। পেট্রাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী এই বিষয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, ‘স্থলবন্দর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা বন্ধের জন্য ভারতের অর্থ মন্ত্রক একটি চিঠি ইস্যু করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে। ফলে ট্রানজিট সুবিধার পণ্য বেনাপোল বন্দর থেকে পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ বন্ধ থাকতে দেখা গিয়েছে।’ মুখ খোলেন, বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমানও। তিনি জানান,পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ঢাকার রপ্তানিকারক ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের ছিল। তিনি বলেন, ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে। সে কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে এদিন চারটি রপ্তানি পণ্যবোঝাই ট্রাক ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশের জন্য গেলে তা ফেরত পাঠায়।
বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট ভারতের তরফে বাতিল করার পর সদ্য মুখ খুলেছেন বাংলাদেশে ইউনুস সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা। বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেন, ভারতের তিনটি বন্দর ব্যবহার করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য ট্রান্সশিপমেন্ট হতো। সরকার এখন অন্য উপায়ে এগুলো করার চেষ্টা করবে এবং এটা করা সম্ভব। তিনি আশা প্রকাশ করছেন, এর প্রভাব শিগগিরই কাটিয়ে ওঠা যাবে। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,হঠাৎ ভারতের নেয়া এমন সিদ্ধান্তে রফতানিতে কোনও প্রভাব পড়বে না।