দিনভর তাণ্ডবের পর কোথাও রেল ক্রসিং ভেঙে পড়ে আছে, কোথাও কাচের টুকরো পড়ে আছে, কোথাও পুড়ে যাওয়া বাইক পড়ে আছে। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বিভিন্ন জায়গায় এমনই দৃশ্য ধরা পড়ে। গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের সেই সব দৃশ্য তুলে ধরেছে বার্তাসংস্থা এএনআই। সেখানে দেখা গিয়েছে, জনশূন্য সড়কে টহল দিচ্ছে বিএসএফ এবং পুলিশ। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, যান চলাচল স্বাভাবিক। তবে রাস্তার পাশে তাণ্ডবের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। পড়ে আছে ইট, পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বস্তু। এদিকে রেল স্টেশনের রিলে রুমে ঢুকে পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী আইন বিরোধীরা। যার জেরে রেল পরিষেবা ব্যাহত হয়েছিল।
মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে রাতে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিল পুলিশ। তারা দাবি করে, বর্তমানে সুতি এবং সমশেরগঞ্জের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘সুতি ও জঙ্গিপুরের সামসেরগঞ্জের পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ বিশৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে সরিয়ে দিয়েছে। জাতীয় সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যারা হিংসার ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা সমস্যা তৈরি করেছে তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে। যারা ভুল তথ্য দিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুজবে কান দেবেন না, শান্ত থাকুন।’
এদিকে রেলের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, ধুলিয়ানগঞ্জ ও নিমতিতার মধ্যে ট্রেন চলাচল ব্য়াহত হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, প্রায় ৫,০০০ মানুষের একটি জমায়েত রেললাইন অবরোধ করে। যার জেরে নিউ ফরাক্কা ও আজিমগঞ্জ রুটে পরিষেবা ব্যাহত হয়। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রেলের সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই ঘটনার জেরে এদিন একাধিক ট্রেন বাতিল করতে হয় এবং বহু ট্রেন ঘুর পথেও চালানো হয়।
উল্লেখ্য, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ-আন্দোলনের জেরে ১১ এপ্রিল ফের একবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মুর্শিদাবাদ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। সুতি এবং সমশেরগঞ্জে পুলিশের উপর ব্যাপকভাবে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। যার জবাব দিতে হয় পুলিশকেও। এমনকী, প্রাণ বাঁচাতে মসজিদে আশ্রয় নেন একাধিক পুলিশকর্মী। হিংসার ঘটনায় দু’জন গুলিবিদ্ধও হয়। পরিস্থিতি সামলাতে বাধ্য হয়েই বিএসএফ-কে রাস্তায় নামাতে হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ট্রেন চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে পরিষেবা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে। ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে বহু জায়গায়।