ভারতীয় ফুটবল দলের সব থেকে নির্ভরযোগ্য ফুটবলারের নাম সুনীল ছেত্রী। স্রেফ জাতীয় ফুটবলের ক্ষেত্রে নয়, কথাটা প্রযোজ্য আইএসএলের ক্ষেত্রেও। এত বিদেশির মাঝেও গোয়ার বিরুদ্ধে এবারের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে আসল কাজের কাজটা কিন্তু করেছিলেন ছেত্রীই, শেষ মূহূর্তের ফ্লাইং হেডারে। সেই সুবাদেই দল উঠেছে ফাইনালে। আর এবারে মোহনবাগানের বিরুদ্ধেও জেরার্ড জারাগোজার প্রধান অস্ত্রের নাম ৪০ বছর বয়সী ফুটবলারটি।
এই মরশুমে আইএসএলে ১৪টি গোল করেছেন ছেত্রী। তাঁর পারফরমেন্স এতটাই ভালো ছিল, যে বাধ্য হয়ে তাঁকে অবসর ভেঙে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের জন্য দলে ডাকেন ভারতীয় দলের কোচ ম্যানোলো মার্কুয়েজ। ম্যাচের আগের দিন বেঙ্গালুরুর কোচ বলছিলেন, ‘ও আমার মাথা পুরো ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমি কো ভাবতেও পারিনি, যে ও এই বয়সেও এমন ফুটবল খেলতে পারবে ’।
ডাগআউট থেকেই ম্যাচ ঘুরিয়েছেন সুনীল
বেঙ্গালুরুর কোচ বলছিলেন, “ সুনীল আর আমি এই মরশুম শুরুর আগে অনেক কথা বলেছি, দীর্ঘ আলোচনা সেড়েছি। আমি চেয়েছিলাম ওকে বেঞ্চ থেকেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে। ও সেটাই করেছে। কিন্তু এরপর ও নিজের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে ফেলে এবং ৯০ মিনিটই খেলা শুরু করে দেয়। আর তারপরেও ও চাইত, যাতে আমি ওকে তুলে না নি। ও নিজের কাজটা ভালোভাবেই করতে পারে। তারপরে ও জাতীয় দলের হয়েও ১ সপ্তাহের মধ্যে ১৯০ মিনিট খেলেছিল।”
জারাগোজা বলছিলেন, ‘আমাদের দল এখন খুবই ভালো ব্যালেন্সড। আমি আশা করব,শনিবারের রাতটা সুনীলের জন্য খুব ভালো যাবে ’। যদিও যুবভারতী স্টেডিয়ামে গতবছর জুন মাসে সুনীলকে অবসরের সময় ভালো স্মৃতি দিয়েছিল কলকাতার ফুটবলপ্রেমীরা, এদিন কিন্তু তাঁরাই নিজেদের জামাইয়ের বিরুদ্ধে গলা ফাটাবেন, তাই কাজটা কঠিন ছেত্রীর কাছেও।
সব কিছুতেই সেরা হতে চায় ছেত্রী
এরপর সুনীলের ইচ্ছাশক্তি নিয়েই বড় বার্তা দিতে শোনা যায় জারাগোজাকে। তিনি বলেন, ‘সুনীল ছেত্রী সব কিছুতেই শীর্ষে থাকতে চায়। যেটাই করে, ও নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে চায়, সেটা খেলার সময় হোক কিংবা প্র্যাকটিসের সময় ’। ২ বছর আগে গোয়ায় আইএসএল কাপের ফাইনালেও নির্ধারিত সময় এবং পেনাল্টি শ্যুটআউটেও গোল ছিল সুনীলের। ফলে চাপের ম্যাচেও তাঁর পারফরমেন্স বরাবরই ভালো থেকে।
ছেত্রীর প্রশংসায় গুরপ্রীত
২০২৩ সালের সঙ্গে ২০২৫ সালের সুনীলের ফিটনেসে যে খুব একটা পার্থক্য হয়নি, সেটা বলাই যায়। বেঙ্গালুরুর হয়ে এবারে ২৭টি ম্যাচের মধ্যে ১৮টি ম্যাচেই প্রথম একাদশে শুরু করেছেন ছেত্রী, খেলেছেন ১৮৪৪ মিনিট। তাই তো সতীর্থকে নিয়ে গুরপ্রীত সিং সান্ধুকে বলতে শোনা যায়, ‘২০১১ সালে যখন আমার সঙ্গে ছেত্রীর প্রথম দেখা হয়, তখন ওর শরীরে ১১শতাংশ ফ্যাট ছিল, এখন ওর শরীরে মাত্র ৬ শতাংশ ফ্যাট রয়েছে ’।