ভিন্ন সম্প্রদায়ের যুবকের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেছেন মেয়ে। কিন্তু, তা মেনে নিতে পারেননি বাবা। সেই হতাশা থেকে নোট লিখে নিজেকে গুলি করে শেষ করলেন বাবা। নোটে ওই ব্যক্তি মেয়েকে দায়ী করার পাশাপাশি আইন ব্যবস্থাকেও দায়ী করেছেন। ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের। বুধবার রাতে ওই ব্যক্তি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃতের নাম ঋষিরাজ ওরফে সঞ্জু জয়সওয়াল। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা যুবকের বাবাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, ঋষিরাজ একটি মেডিক্যাল স্টোর মালিক। রাত ১টার দিকে তাঁর ঘর থেকে গুলির শব্দ শুনতে পান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে গিয়ে তাঁরা ঋষিরাজকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর কোমরে গুলি লেগেছিল বলে জানা গিয়েছে।প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঋষিরাজের মেয়ে প্রায় ১৫ দিন আগে পাড়ার এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেন। পরে তাঁকে ইন্দোরে খুঁজে পান পরিবারের সদস্যরা। আদালতে হাজির করা হলে মেয়েটি ওই যুবককে স্বামী বলে দাবি করে তাঁর সঙ্গে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঋষিরাজ তাঁর মেয়ের আধার কার্ডের প্রিন্টআউটে একটু চিরকুট রেখে যান। তাতে মেয়ে পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করার সিদ্ধান্তের জন্য তিনি ছত্রে ছত্রে মানসিক যন্ত্রণা বর্ণনা করেছেন। জানা গিয়েছে, চিরকুটে তিনি মেয়েকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘তুমি ভুল করেছ, আমি চলে যাচ্ছি। আমি তোমাদের দুজনকেই হত্যা করতে পারতাম। কিন্তু আমার মেয়েকে কীভাবে হত্যা করতে পারি?’ চিঠিতে তিনি পিতামাতার অধিকার এবং প্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের সঙ্গে জড়িত আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছু মতামতও লিখেছেন। তাতে লেখা ছিল, ‘যে আইনজীবী কিছু টাকার জন্য পুরো পরিবারকে শেষ করে দিল তাঁর কি মেয়ে নেই? তিনি কি একজন বাবার কষ্ট বোঝে না? একটি পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এখন সমাজে আর কিছুই বাকি রইল না।’
নোটে তিনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘যদি আর্য সমাজের অধীনে বিবাহ বৈধ না হয়, তাহলে আদালত কীভাবে মেয়েটিকে যুবকের সঙ্গে যেতে অনুমতি দিতে পারে? এতে আমাদের পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কেউ আমার কষ্ট বুঝতে পারেনি।’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিরঞ্জন শর্মা জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে । এদিকে, ঋষিরাজের মৃত্যুর পরে ওই যুবকের বাবাকে বেধড়ক মারধর করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে আনার পর অজ্ঞান না হওয়া পর্যন্ত মারধর করা হয়েছিল। পুলিশ দুটি ঘটনাটির তদন্ত করছে।