সাপোর্ট স্টাফ ও তারকা ক্রিকেটারের ঠান্ডা লড়াইয়ের বলি নায়ার? 

Spread the love

ভারতীয় ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ অভিষেক নায়ারকে তার নিয়োগের মাত্র আট মাসের মাথায় বরখাস্ত করা হল। যদিও নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ভরাডুবিকেই এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলছে, দলের সহকারী কোচিং স্টাফের একজন প্রভাবশালী সদস্য ও একজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের মধ্যে দ্বন্দ্বের বলি হতে হয়েছে নায়ারকে।

বোর্ডের সূত্র জানিয়েছে, নায়ারকে ইতিমধ্যেই তাঁর বরখাস্তের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক বোর্ড কর্মকর্তা পিটিআই-কে বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ায় সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে ঠিকই, তবে এটা সত্যি যে নায়ার এক ধরনের ‘স্কেপগোট’ অর্থাৎ ‘বলির পাঁঠা’ হয়েছেন। দলের অভ্যন্তরীণ শক্তি-সাম্যের দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে গিয়েছেন অভিষেক নায়ার।’

সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভারতীয় দলের আরও দু’জন সাপোর্ট স্টাফ। ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ ও স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ সোহম দেশাইয়ের মেয়াদও শেষ হয়েছে এবং তাঁদেরও সরে যেতে বলা হয়েছে। বিসিসিআই-এর নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (SOP) অনুযায়ী, সাপোর্ট স্টাফদের মেয়াদ সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। এছাড়া জানা গিয়েছে, ভারতের প্রথম স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ আদ্রিয়ান লে রু আবার দলে ফিরতে চলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এই ফিটনেস কোচ ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন দলের ফিটনেস সংস্কৃতি পাল্টে দিয়েছিলেন। বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘এই বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই বিসিসিআই-এর তরফ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি আসবে।’

আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও ‘কাউন্টার-প্রোডাক্টিভ’ তকমা

সূত্র জানিয়েছে, নায়ারের অপসারণের আভাস পাওয়া গিয়েছিল সিতাংশু কোটাককে অতিরিক্ত ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ করার সময় থেকেই। অস্ট্রেলিয়া সফরের পর বিসিসিআই একটি রিভিউ মিটিং করে যেখানে বোর্ড সচিব, সহ-সভাপতি, জাতীয় নির্বাচকরা এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সেই মিটিংয়ের বাইরেই নায়ারের উপস্থিতিকে ‘কাউন্টার-প্রোডাক্টিভ’ বলে উল্লেখ করেন দলের এক প্রভাবশালী কোচিং স্টাফ সদস্য। এরপরই কোটাককে নিয়ে আসা হয় এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় নায়ারকে কার্যত পাশে সরিয়ে রাখা হয়।

সূত্র আরও বলছে, গৌতম গম্ভীর যখন প্রধান কোচ হন, তখন অভিষেক নায়ার তার প্রথম পছন্দ ছিলেন না। বরং তাঁকে নিযুক্ত করা হয়েছিল গম্ভীর এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মার মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করার জন্য। কারণ মুম্বই দলের সময় থেকে রোহিত ও নায়ারের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। নায়ার ও দিলীপ, দু’জনই রোহিতের সবচেয়ে ভরসাযোগ্য মানুষদের একজন হিসেবে পরিচিত। তবে বিসিসিআই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রোহিতকে আদৌ জানানো হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়। এদিকে অভিষেক নায়ারকে সরিয়ে দেওয়ার পরে দলে রোহিত শর্মাকে নিয়েও নানা জল্পনা শুরু হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *