একই এপিক নম্বরে দুই ভোটার। এই তথ্য প্রথম বঙ্গবাসীর সামনে নিয়ে আসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকে দেশজুড়ে তোলপাড় হয়ে যায়। আর এভাবেই ভূতুড়ে ভোটার ঢুকিয়ে বিজেপি অন্যান্য রাজ্যে জিতছে বলে অভিযোগ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তখনই উঠে আসে অভিযোগ যে, মহারাষ্ট্রে এবং দিল্লিতে ভূতুড়ে ভোটার ঢুকিয়ে জিতেছে বিজেপি। এরপরই নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আবহে ভোটার তালিকায় স্ক্রুটিনিকে বড় আকারে নিয়ে যেতে উদ্যোগ নিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার রাজ্যব্যাপী কর্মসূচিতে নেমে পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস। বুথ স্তরের কর্মীরা মানুষের দুয়ারে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখছেন ভোটার তালিকার সমস্যা।
এদিকে বছর ঘুরলেই ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তাই এখন থেকে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ধরার কাজ শুরু হয়েছে। সেই তথ্য তুলে ধরা হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগ মেনে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর তাই তারা প্রতিশ্রুতি দেয়, ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর গড়ে তোলার। যদিও তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। এই আবহে খোঁজা হচ্ছে ‘ভূতুড়ে ভোটার’। এবার দিদির দূত অ্যাপ দিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। ৮০ হাজার বুথে এই কাজ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে কোনও ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ধরা পড়লেই যাতে দ্রুত অ্যাকশন নেওয়া হয় সেই নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে পুলিশের কাছে বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই চম্পাহাটি থেকে শুরু করে বারাসতে আগেই ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ধরা হয়েছিল। যা নিয়ে নয়াদিল্লিতে সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। আর ওই ‘ভূতুড়ে ভোটার’ তালিকা পৌঁছে দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের দফতরে। এবার এই কর্মসূচি নিয়ে শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের দমদম–বারাকপুর সাংগঠনিক জেলার একটি বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘ভিন রাজ্য থেকে আমাদের রাজ্যে ভুয়ো ভোটারের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা করতে। এখন রাজ্যজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী কাজ করছেন এই ভূতুড়ে ভোটার ধরতে। বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত চলবে।’
এছাড়া এই ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মন্ত্রীরা তুলেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও বিজেপি তা মানতে নারাজ। তাঁরা নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন। নিজেদের দাবি জানিয়ে এসেছেন। আর এই বিষয়ে মন্ত্রী মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘বিজেপি যে পথই নিক, বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নের উপরই আস্থা আগামী দিনেও রাখবেন।’ মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কথায়, ‘২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ধর্মীয় বিভেদের চেষ্টা করছে বিজেপি। লাভ হবে না।’