গুলি চলল হাসপাতালে। আর তার শব্দে কেঁপে উঠল গোটা হাসপাতাল। শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল চত্বরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর পরিবারে কেউ গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। আজ, শনিবারও এই ঘটনা নিয়ে আতঙ্কের বাতাবরণ রয়েছে। এখানে কমপক্ষে ৩ রাউন্ড গুলি চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও গুলি লেগে কেউ হতাহত হননি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ ধৃতদের দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
এদিকে এই ঘটনার পর থেকে অন্যান্য রোগীরা সিঁটিয়ে রয়েছেন। এখনও তাঁদের গত রাতের ট্রমা কাটেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দিন দুর্গাপুরের অঙ্গদপুরের বাসিন্দা বাসুদেব পাল (৫৩) পথ দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর আঘাত গুরুতর ছিল বলেই আরও ভাল মানের চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যদের অন্যত্র স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালের পক্ষ থেকে এই পরামর্শ দেওয়া হলেও তাতে তেমন কর্ণপাত করেননি রোগীর পরিবারের কেউ বলে অভিযোগ। যদিও রোগীর পরিবারের সদস্যদের পাল্টা দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই করেনি।
অন্যদিকে হাসপাতালের দাবি ঠিক নাকি রোগীর পরিবারের সদস্যদের কথা ঠিক তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে যেহেতু রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে আক্রমণ করা হয়েছে তাই তাদের কথাই অসত্য বলে ধরা হচ্ছে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে গতকাল রাতে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান বাসুদেব পালের পরিবারের সদস্যরা। এই বিক্ষোভ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দুর্গাপুর থানার পুলিশ। আর এই ঘটনা নিয়ে রোগীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, তারা রোগীকে দেখতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের দেখা করতেও দেওয়া হয়নি। তাই বিক্ষোভ দেখায় রোগীর পরিবারের লোকজন।
এছাড়া হাসপাতাল বনাম রোগীর পরিবারের ঝামেলায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গেও বচসা হয় রোগীর পরিবারের সদস্যদের। তার জেরে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তিও হয় বলে ওঠে অভিযোগ। আর তখন পুলিশের উপস্থিতিতেই এক ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র বের করে তিন রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনা ঘটার পর দুর্গাপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আর তাপস রায়, অমিত কর্মকার, অনিমেষ পাল এবং অজিত হাজরা নামে চারজনকে গ্রেফতার করে দুর্গাপুর থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রটি।