রাজ্যপালকে বললেন মুর্শিদাবাদ হিংসার কবলে পড়া মহিলারা

Spread the love

মুর্শিদাবাদ হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সাথে দেখা করতে ১৮ এপ্রিল মালদার শিবিরে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল বোসকে সামনে পেয়েই নিজেদের ওপর হওয়া অত্যাচারের কথা শোনালেন ধলিয়ানের মহিলারা। এই নিয়ে পরে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলেন বোস। রাজ্যপালের দাবি, মহিলারা তাঁকে বলেন যে তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং দুষ্কৃতীরা তাঁদের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল। শুধু তাই নয়, তাঁদের লাঞ্ছিত ও নির্যাতনও করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই ক্যাম্পে বসবাসকারী পরিবারগুলোর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমি তাঁদের সমস্যার কথা বিস্তারিতভাবে শুনেছি এবং তাঁদের অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করেছি। মহিলারা জানান যে দুষ্কৃতীরা তাঁদের বাড়িতে ঢুকে গালিগালাজ করে, মারধরও করে। তাঁরা কী চায়, সেই বিষয়ে আমাকে বলেছেন। এ বিষয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ করা হবে।’

রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘এক নির্দিষ্ট সম্প্রদায় আক্রান্ত হয়েছেন। এক দল মারবে, অন্য দল আক্রান্ত হবে, কোনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এটা হতে পারে না। এখানে যে অশান্তি হয়েছে, তা কোনও সুস্থ মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমি এখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেছি, এখানে এখনও আতঙ্কের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এভাবে মানুষ বেঁচে থাকতে পারেন না।’

সহিংসতা কবলিত মুর্শিদাবাদ জেলার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। এদিকে ধুলিয়ান এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে এখনও। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর আছে। সে গত ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয়রা। এই আবহে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলে তা না নেওয়ার ঘোষণা করেন নিহতের পরিবার। এদিকে এলাকায় শান্তি ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বিএসএফ।

এদিকে ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। সেদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ধুলিয়ানে একটি শপিংমলেও লুটপাট চালানো হয়েছিল। এদিকে ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামের দাদা আলির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বিধায়ককেও হেনস্থা করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। এছাড়া জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুরের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এদিকে মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *