Assam Flood Latest Update: অসমে ভয়াবহ বন্যা! ৫২জনের মৃত্যু

Spread the love

অসমে(Assam) ভয়াবহ বন্যা। বহু মানুষ ঘরছাড়া। মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অসমে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, সব মিলিয়ে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। বন্যার দ্বিতীয় পর্যায়ে রাজ্যের ৩৫টি জেলার মধ্যে ৩০টি জেলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রাজ্যজুড়ে ২৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।বন্যার জলে নিজের পাকা বাড়ি হারিয়ে এখন বরপেটা জেলার একটি ত্রাণ শিবিরে থাকেন জব্বার আলি (৩৯)।

স্ত্রী, দুই মেয়ে ও অসুস্থ মাকে নিয়ে তিনি অন্য এক গ্রামবাসীর বাড়িতে আশ্রয় চেয়েছিলেন, কিন্তু বন্যার জলে সেই বাড়িটিও ডুবে যায়।

গত এক মাস ধরে পরিস্থিতি ভয়াবহ , যার ফলে ফসল ধ্বংস ও গবাদি পশুর ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানি ও পরিকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটিতে হাজার হাজার মানুষ বন্যার জেরে ঘরছাড়া অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

এএনআইকে জব্বার আলি নামে অসমের এক দুর্গত বাসিন্দা জানিয়েছেন, ভাঙনের কারণে এক মাস আগে আমার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন আমি ও আমার পরিবার গ্রামের অন্য একজনের বাড়িতে থাকি। আমাদের কোনো ঘরবাড়ি নেই। আমার দুই মেয়ে, মা ও স্ত্রী। আমরা যে বাড়িতে থাকতাম সেটিও প্লাবিত হয়েছে এবং আমরা এখন একটি ত্রাণ শিবিরে অস্থায়ী তাঁবুর নীচে বাস করছি।

অসম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএসডিএমএ) জানিয়েছে, নিয়ামাতিঘাট, গুয়াহাটি, গোয়ালপাড়া এবং ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্তর বিপদসীমার উপরে রয়েছে।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী(Cm) পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিব্রুগড় শহরে যান এবং বলেন যে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং সরকার সকলকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে।

রাজ্যপাল গুলাব চাঁদ কাটারিয়া এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও বন্যা প্রভাবিত জেলাগুলি পরিদর্শন করেছেন এবং রাজ্যের মন্ত্রীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন জেলায় অবস্থান করছেন।

রাজ্য জুড়ে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য এনডিআরএফ এবং দমকল পরিষেবার পাশাপাশি রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

এলাকা ও গ্রামবাসীদের রক্ষায় সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে জব্বার বলেন, প্রতিবছর অব্যাহত ভাঙন ও বন্যায় রৌমারী পাথর এলাকায় বসবাসরত প্রায় ৫০০ পরিবার তাদের জমি হারিয়েছে।

সফিকুল আলম বলেন, বন্যার জেরে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং গ্রামের বেশিরভাগ বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি এবং ভাঙন ও বন্যা সমস্যা ছোটখাটো সমস্যা নয়; এগুলো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। মানুষের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। পুরো গ্রাম এখন নদীর মাঝখানে। ঘরবাড়ি হারানো লোকজন এখন সড়কে অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাস করছেন। সরকার এখানে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিলে আমরা রক্ষা পাব।

অসমের বরপেটা জেলার প্রধান সমস্যা নদীভাঙন ও বন্যা। প্রায় ১,৪০,০০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৭৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং প্রায় ১,৫৭১.৫ হেক্টর জমিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধুবড়ি জেলা, যেখানে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৭২১ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যার পানিতে ৬৩,৪৯০.৯৭ হেক্টর ফসলি এলাকা ডুবে গেছে এবং ১১২টি রাজস্ব সার্কেলের ৩,৫১৮টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *