ওভারলোডিং বন্ধে এবার আরও কড়া হচ্ছে রাজ্য সরকার। নজরদারি বাড়াতে মোটর ভেহিকেলস ইনস্পেক্টরদের (এমভিআই) জন্য বডি ক্যামেরা কিনছে পরিবহণ দপ্তর। সূত্রের খবর, প্রায় ৪০০টি বডি ক্যামেরা(Body Camera) কেনা হচ্ছে। অনেক সময়ই দেখা যায়, এমভিআইরা ট্রাক বা অন্য কোনও ওভারলোডেড গাড়ি চেকিংয়ের জন্য দাঁড় করাতে চাইলেও চালক গতি বাড়িয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। গাড়ির নম্বরও নজর এড়িয়ে যায় পুলিশ এবং এমভিআইদের। ধাওয়া করেও অনেকক্ষেত্রেই তাঁকে ধরা যায় না। কিন্তু নয়া এই ক্যামেরা শরীরের সাথে লাগানো থাকবে এমভিআইদের। ফলে তাঁদের নজর এড়ালেও ক্যামেরার চোখকে এড়াতে পারবেন না গাড়ির চালক।
গাড়ির নম্বর ক্যামেরায় ধরা পড়লেই মেসেজ চলে যাবে মালিকের কাছে। অতিরিক্ত পণ্যবাহী গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। একইসঙ্গে রাস্তার দুধারে চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকা এমভিআইদের জন্য বিশেষ জ্যাকেট কেনা হচ্ছে প্রায় ৬০০টি। যাতে রাতের অন্ধকারেও গাড়ির চালক দূর থেকে দেখতে পান রাস্তায় চেকিং চলছে। সেইমতো সতর্কভাবে তিনি গাড়ি চালান। গাড়ির চালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এই জ্যাকেট পড়ানো হবে এমভিআইদের।
বছর দুয়েক আগে ফরাক্কার বল্লালপুরের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বাড়তি পণ্যবাহী ট্রাক ধরতে গিয়ে বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন জঙ্গিপুরের সহকারী পরিবহণ আধিকারিক সৌম্যদ্যুতি সাহা। পুলিশ জানায়, সৌম্যবাবুকে ধাক্কা মেরে পিছনের চাকায় তাঁর বাঁ পা পিষে দিয়ে ট্রাকটি দ্রুত গতিতে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য ট্রাকটিকে আটকানো হয়। এই ঘটনার পর এমভিআইদের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এবার তাঁদের নিরাপত্তা এবং নজরদারি বাড়াতেই এই বিশেষ ক্যামেরা এবং জ্যাকেট কিনছে পরিবহণ দপ্তর। ইতিমধ্যেই এই ফাইল পাঠানো হয়েছে নবান্নে। সেখান থেকে এখনও অবশ্য ছাড়পত্র আসেনি।
শুধু সরকারের রাজস্ব ফাঁকি নয়, ভারী গাড়ির ওজন নিতে না পেরে প্রায়শই রাজ্যের সড়কপথ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন ভাবে বানানো রাস্তা নষ্ট হচ্ছে দিন কয়েকের মধ্যেই। মেরামতি আর পুনর্নির্মাণে বাড়ছে সরকারি খরচও। সবদিকে নজর রেখে তাই পণ্যবাহী গাড়িগুলির ওভারলোডিং বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সড়কপথে পণ্যবাহী গাড়িগুলির অতিরিক্ত বোঝা কমাতে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি ওভারলোডেড পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও(Mamata Banerjee)। তার পর আরও তৎপর হয়েছে পরিবহণ দপ্তর।