দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ মেয়রের

Spread the love

কলকাতা পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলিতে যেসব ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে বর্ষায় তারা ভিজে যায়। এই কারণে বর্ষাতি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায়, এখানেও আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। আর গোটা বিষয়টি নিয়ে মেয়রকে আড়াল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাই তদানীন্তন কলকাতা পুরসভার দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বর্ষাতি নিয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাত সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাঁরা একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তারপরই এই অ্যাকশন নেওয়া হল।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে কর্পোরেশন স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২ হাজার ৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়। কিন্তু এই বর্ষাতি কেনার প্রক্রিয়া নিয়ে পুরসভার শিক্ষা বিভাগ নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজ করছিল বলে আপত্তি জানিয়েছিল পুরসভার অর্থ বিভাগ। এমনকী বিষয়টি নিয়ে দরপত্র প্রক্রিয়ায় ‘ছাড়’ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে মেয়রের কাছে ফাইল যায়। কিন্তু মেয়র ওই ফাইলের উপরে ‘নো’ লিখে দেন। সেই নির্দেশ অমান্য করেই পুরসভার শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে দরপত্র ছাড়া ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা দিয়ে ২২০৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়। যা কলকাতা পুরসভার অভ্যন্তরীণ অডিটে ধরা পড়ে। এই বিষয়ে মঙ্গলবার মেয়র বলেন, ‘কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তদানীন্তন দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। দুর্নীতি করে যাঁরা পার পেয়ে যাবেন ভাবছেন, তাঁরা ভুল করছেন।’‌

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই কলকাতা পুরসভার অন্দরে কানাঘুষো চর্চা শুরু হয়েছে। এই কড়া পদক্ষেপ আগে কাউকে করতে দেখা যায়নি। মেয়র যে এমন কড়া পদক্ষেপ করবেন সেটা কেউ ভাবতেও পারেননি। আসলে পড়ুয়াদের সঙ্গে দুর্নীতি মেয়র বরদাস্ত করেননি। তার সঙ্গে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ। মেয়রের নির্দেশ অমান্য করে অনৈতিক কাজে সামিল হওয়া মেনে নেওয়া হয়নি। তাই কলকাতা পুরসভার শিক্ষা বিভাগের তদানীন্তন চার আধিকারিক এবং কর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

কলকাতা পুরসভার অডিটর তাঁর রিপোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, একাধিক সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিতে মোটা টাকার বর্ষাতি কেনা হয়েছিল। তাও সম্পূর্ণ নিয়মবিরুদ্ধভাবে। এই বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ মেয়র দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে তদানীন্তন পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমারকে নির্দেশ দেন। আর বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে কোন পথে হেঁটেছিল তাঁরা তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করতে নির্দেশ দেন। সাত সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি মেয়রের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেখানেই বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে বিরাট গড়মিল ধরা পড়েছে। আর মেয়র তৎক্ষণাৎ শিক্ষা বিভাগের তদানীন্তন দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *