Abdur Razzak Molla Demise। প্রয়াত রেজ্জাক মোল্লা

Spread the love

প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রবীণ রাজনীতিক আবদুর রেজ্জাক মোল্লা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, আজ (শুক্রবার – ১১ এপ্রিল, ২০২৫) সকালে ভাঙড়ের বাকড়ি গ্রামের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

প্রয়াত নেতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনতি নানা অসুখ তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছিল। যার জেরে সক্রিয় রাজনীতি থেকেও ইদানীংকালে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছিলেন তিনি। গর্বের সঙ্গে নিজেকে ‘চাষার ব্যাটা’ বলে পরিচয় দিতেন তিনি। তাঁর এই প্রয়াণে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

তাঁর প্রয়াণে সমাজমাধ্যমে শোকজ্ঞাপন করে একটি পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি প্রয়াত প্রবীণ রাজনীতিককে ‘আমরা সহকর্মী’ বলে উল্লেখ করেছেন।

মমতা তাঁর শোকবার্তায় লিখেছেন, ‘আমার সহকর্মী, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার প্রয়াণে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী ছিলেন। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সম্মান করতাম।… তাঁর প্রয়াণে বাংলার রাজনৈতিক জীবনে অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল।…’

গ্রাম বাংলার মেঠো রাজনীতিতে আবদুর রেজ্জাক মোল্লা যে চিরকাল একটা ফ্যাক্টর হয়ে থেকেছেন, নিজের শোকবার্তা সেই আভাসও দিয়েছেন মমতা। প্রশংসা করেছেন তাঁর রাজনৈতিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার। সবশেষে সদ্য কাছের মানুষ হারানো আবদুর রেজ্জাক মোল্লার পরিবারবর্গ ও তাঁর প্রিয়জনদের উদ্দেশে সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, প্রায় পাঁচ দশকের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আবদুর রেজ্জাক মোল্লা বরাবরই স্বমহিমায় উজ্জ্বল থেকেছেন। যার শুরুটা হয়েছিল বামপন্থী রাজনীতির হাত ধরে। ১৯৭২ সালে সিপিআই(এম)-এর টিকিটে বিধানসভা নির্বাচনে লড়ে জিতেছিলেন তিনি। ভাঙড়ের বিধায়ক হিসাবে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিধানসভায়।

এরপর ১৯৭৭ সালেও ভোটে দাঁড়ান তিনি। এবারের কেন্দ্র ক্যানিং পূর্ব। সেখানেও জেতেন তিনি। তাঁকে মন্ত্রী করে রাজ্যের তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। বাম আমলে দীর্ঘ সময় ধরে রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী হিসাবে এবং ভূমি সংস্কার দফতরের দায়িত্ব সামলেছেন রেজ্জাক মোল্লা।

কিন্তু, একটা সময় বামেদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। ২০১৪ সালে দলবিরোধী মন্তব্য করার জন্য তাঁকে বহিষ্কার করে সিপআই(এম)। এর ঠিক দু’বছর পর, ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখান রেজ্জাক মোল্লা। আবার ভাঙড়ের প্রার্থী হন তিনি। তবে, ২০১৬ সালে তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ছিল জোড়া ফুল। তাতেও জয়ী হন তিনি এবং তৃণমূল জমানাতেও মন্ত্রিত্ব সামলান।

আবদুর রেজ্জাকের মেঠো ভাষা ছিল তাঁর অন্যতম ইউএসপি। গ্রামের মানুষের সঙ্গে তাঁর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল। সূত্রের দাবি, তাঁর নাকি একটি বিশেষ ইচ্ছা ছিল। তা হল – মৃত্যুর পর তাঁকে যেন তাঁর বসত ভিটেতেই কবর দেওয়া হয়। তেমন কিছু করা হবে কিনা, সেই বিষয়ে অবশ্য এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি। তবে, বর্ষীয়ান রাজনীতিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই তাঁর বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন রাজনীতিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *