বাংলাকে বঞ্চনা নিয়ে আগেই নানা অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। দেশের অর্থ বাজেট যে মানুষের উপর বোঝা চাপাবে তাও বলেছিলেন তিনি। এবার সংসদে দাঁড়িয়ে তা প্রমাণ করেও দিলেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। যাঁর প্রশ্নে চাপে পড়ে গেল কেন্দ্রীয় সরকার এবং ফাঁস হয়ে গেল সেস ও সারচার্জ বৃদ্ধির খতিয়ান। অভিষেকের প্রশ্নের জেরে সংসদে ২০১৪–১৫ থেকে শুরু করে ২০২৫–২৬ অর্থবর্ষ পর্যন্ত কার্যকর হওয়া সেস এবং সারচার্জের তথ্য পেশ করল অর্থ মন্ত্রক। আর কেন্দ্রীয় সরকারের ওই তথ্যেই দেখা গেল, করের উপর বসানো হয়েছে অতিরিক্ত সেস বৃদ্ধির হার।
এই বোঝা চেপেছে দেশের মানুষের উপর। শ্রমিক থেকে শুরু করে প্রান্তিক কৃষক এবং দেশের মানুষ তা কষ্ট করে বয়ে চলেছে। আর এই অতিরিক্ত সেসের জেরে জিনিসপত্রের দাম বেনে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের(Nirmala Sitharaman) মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যানেই ফাঁস হয়েছে, এখন কার্যকর থাকা সেসগুলি ২০১৪–১৫ অর্থবর্ষে যে পরিমাণ ছিল সেটা ২০২৫–২৬ অর্থবর্ষে বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারশো শতাংশ। যা অবাক করার পক্ষে যথেষ্ট। পাশাপাশি সংসদে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, এখন চালু থাকা এবং বন্ধ হওয়া সেস ও সারচার্জগুলি থেকে গত ১০ বছরে মোদী সরকার আয় বেড়েছে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৮৯ কোটি টাকা।
দেশবাসী এভাবেই নিজেদের কষ্ট করে উপার্জন করা টাকা নানাভাবে দিয়ে চলেছেন বলে অভিষেকের অভিযোগ। ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষে ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ প্রকল্পে আদায় করা সেসের পরিমাণ ৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। এবার বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছেন। এই বৃদ্ধির ফলে বিপুল সংখ্যক চাকরিজীবী উপকৃত হবেন বলে দাবি পর্যন্ত করা হয়েছে। এই আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি নিয়ে প্রচার পর্যন্ত করা হয়েছে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে সারচার্জের মাধ্যমে টাকা আদায় করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে অর্থ মন্ত্রক রিপোর্ট দিয়ে জানাচ্ছে, ২০১৪–১৫ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৫–২৬ অর্থবর্ষে আয়করে সারচার্জ বৃদ্ধির হার ৯৯৯ শতাংশ। যার জেরে কেন্দ্রীয় সরকারের আয় বেড়েছে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা।
আবার কৃষি ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও তার সদ্ব্যবহার করা হয়নি বলেও ফাঁস হয়ে গিয়েছে সংসদে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, সব মিলিয়ে সেস এবং সারচার্জ থেকে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের আদায়ের অঙ্ক ৩ লক্ষ ১৮ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। গতকাল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়র আর একচি প্রশ্ন করেন। যার উত্তরে কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রী রামনাথ ঠাকুর কেন্দ্রের ২৮টি কৃষি এবং কৃষক উন্নয়ন কর্মসূচির বাজেট বরাদ্দ থেকে শুরু করে খরচ বিষয়ক খতিয়ান পেশ করেন। তাতে দেখা যায়, ২০১৯–২০ থেকে ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত মোট বাজেট বরাদ্দ সদ্ব্যবহারই করা যায়নি। আর এই প্রবণতা বেড়েই চলেছে। ২০২৩–২৪ বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। সেখানে সদ্ব্যবহার হয়েছে ১৪ হাজার ২৫১ কোটি টাকা।