তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের কাছে তামিলনাড়ুতে ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠক্রম তামিল ভাষায় পড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। হিন্দি আগ্রাসনের অভিযোগ খণ্ডাতে এবার কৌশলী পদক্ষেপ নিলেন অমিত শাহ(Amit Shah)।
শুক্রবার তামিলনাড়ুর রানিপেটে সিআইএসএফ-এর একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ। যেখানে তিনি সিআইএসএফ জার্নাল ‘সেন্টিনেল’ প্রকাশ করেন এবং প্যারেড পর্যালোচনা করেন। ওই অনুষ্ঠান থেকেই অমিত শাহ বলেন, ‘তামিলনাড়ুতে মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠক্রম দ্রুত তামিল ভাষায় চালু করার জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রীকে আর্জি জানাতে চাই।এভাবে শুধু মাতৃভাষা শক্তিশালী হবে না, বরং যাঁরা তামিল ভাষায় পরীক্ষা দেবেন, তাঁরাও সমান সুযোগ পাবেন। আমি আশা করি, মুখ্যমন্ত্রী শীঘ্রই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করবেন। গত দুই বছর ধরে আমি এটি বলছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’
অমিত শাহ অবশ্য এখানেই থামেননি। তিনি জানান, আগে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ)-র পরীক্ষা মাতৃভাষায় দেওয়া যেত না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সিদ্ধান্তে এবার এই পরীক্ষা বাংলা, তামিল-সহ অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত সব ভাষায় দেওয়া যাবে।
অনেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে পাল্টা স্ট্যালিনের উপর চাপ বৃদ্ধির কৌশল বলে মনে করছেন।
এর আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে নিশানা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী তামিলনাড়ুতে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিলেন, যা তাঁদের সম্মানহানির কারণ হয়েছে। স্ট্যালিন আরও বলেন, ‘তামিলনাড়ু কখনও হিন্দির চাপ না মেনে চলবে। এখানে আমাদের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোন প্রশ্ন নেই, বরং আমরা ঐতিহ্য রক্ষার জন্য কঠোরভাবে প্রতিরোধ করব।’ তিনি উল্লেখ করেছিলেন, তামিলনাড়ু ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি মানতে অস্বীকার করেছে, অথচ রাজ্যটি ইতিমধ্যে অনেক লক্ষ্য অর্জন করেছে যা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জন করার কথা।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির অন্তর্গত তিন ভাষা নীতিতে বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা তিনটি ভাষা বাধ্যতামূলক ভাবে শিখবে ইংরেজি, হিন্দি এবং স্থানীয় ভাষা। তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ রাজ্যেই দু’টি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক ইংরেজি এবং স্থানীয় ভাষা। তিন ভাষা নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে হিন্দি শিক্ষা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে তামিলনাড়ুর মতো দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলি থেকে অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যেই। যদিও সম্প্রতি অমিত শাহ তামিলনাড়ু সফরে গিয়ে বলেছিলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী সরকার কোনও রাজ্যের উপর জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেবে না।’ অন্যদিকে, স্ট্যালিনের নেতৃত্বে, তামিলনাড়ু সরকার দেশের ভাষা নীতি সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে, যা রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলছে।